বার্তা পরিবেশকঃ
গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজার লালদীঘি পাড়ের বাসিন্দা মৃত আহাসান উল্লাহর ছেলে শহর আলীকে ঘিরে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ হয়। সংবাদগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করেছেন তিনি।

তার দাবি, সম্পত্তির ভাগ বনিবনার বিরোধের সুত্র ধরেই সংবাদগুলো ছাপানো হয়েছে। যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাই।

এ বিষয়ে সোমবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন ভুক্তভোগি শহর আলী।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,
বড় দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমি আপনাদের সম্মুখে হাজির হয়েছি। গত কিছু দিন ধরে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় আমার বিরুদ্ধে ঢাহা মিথ্যা বানোয়াট গল্প সাজিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যা আমি ও আমার পরিবারের কাছে অত্যন্ত বিব্রতকর। পৈত্রিকভাবে তেমন কোন সম্পদ না থাকলে ও আমি ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ (চার) বছর প্রবাস জীবনে হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে রেমিটেন্স এনে আজ আমার পরিবার নিয়ে কোন মতে সুন্দর জীবন যাপন করে যাচ্ছি। এতে প্রতিহিংসার বশবর্তি হয়ে আমারই ছোট ভাই জামাল আমার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করা ও প্রশাসনের কাছে আমাকে কালার করার ঘৃণ্য চক্রান্ত করছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাকে বিভিন্ন মামলায় ও ফাঁসানোর চেষ্টা করে। সামান্য সফল হলেও সে পরিপূর্ণ সফল হতে না পেরে এখন আমার বিরুদ্ধে প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করাচ্ছে। সে বলেছে, আমার ১২ টি মামলা আছে।
আমার ওপেন চ্যালেঞ্জ, থানায় বা কোর্টে গিয়ে যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি মেনে নেব আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সব সত্য। তাছাড়া, কোন এক ফারুকের সাথে আমাকে জড়িয়ে মাদক ব্যবসায় আমার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ করতে চাইছেন। অথচ আমার সাথে কোন সেই ফারুকের সংশ্লিষ্টতা নেই এমনকি এখনো আমি বুঝতেছিনা কে সেই ফারুক। সচেতন মহলের কাছে আমার বিনীত প্রশ্ন, আইনশৃংখলা বাহিনী কি ঘোড়ার ঘাঁস কাটে? আমার বিরুদ্ধে এত মামলা আছে আর আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে মসজিদের বারান্দায় বসে থাকি ২৪ ঘন্টা? আমি তার এ জঘণ্য মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি আরো জানাচ্ছি যে, আমি কোন ধরনের অনৈতিক অপকর্মের সাথে জড়িত নেই। সাংবাদিকগণ জাতির দর্পন। মানুষ অনন্যউপায় হয়ে প্রিয় সাংবাদিকদের ধারস্থ হয়। মিথ্যা সংবাদ প্রচারের জন্য নয়। আপনারা তথ্য নিলে জানতে পারবেন, আমার বাবা মরহুম হাজী আহসান উল্লাহ ও চাচা মরহুম হাজী ছৈয়দ নুর, নুরুল কবির যৌথভাবে ব্রাক্ষ সমাজের কমিটি হইতে ভিন্ন ভিন্ন কবলা মূলে ৬ শতক জমি খরিদ করিয়া চৌহদ্দি মতে ভোগ দখল করে আসতেছি ১৯৮৪ সাল থেকে। তৎকালীন কমিটির বিক্রেতা কক্সবাজার বারের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট পিযুষ কান্তি চৌধুরী বিক্রিত জমি পৃথক পৃথকভাবে চিহ্নিত করে বি.এস ৬৮৬৪ দাগের পূর্বাংশে চিহ্নিত করিয়া ক্রেতাগণের বরাবরে দখল অর্পন করেন। পরবর্তীতে তারা তিন ভাই ক্রয়কৃত জমি সমানভাবে বন্টন করিয়া ভোগদখল করতে থাকেন। তৎমধ্যে ২০০৬ সালে কোর্টে চলাচলের রাস্তার জন্য আমার বাপ ও চাচারা মিলে অত্র দাগের পূর্বাংশে কিছু জায়গা ছাড় দিয়ে দেন। বাকি জায়গায় আমি ও আমার বাপ চাচারা মিলে পূর্বাংশে দোকান তৈরি করে ভাড়া দিই। সেই থেকে আজ অবধি আমি ভোগদখল করে আসতেছি। আমাদের ভাই বোনদের সবাইকে আমি আমার নিজের অর্থায়নে গড়ে তুলেছি, আমার চার বোনকে নিজের অর্থায়নে বিয়ে দিয়েছি। আমাদের আদরের ছোট ভাইয়ের (জামালের) জন্ম ১৯৮৬ সালের ১২ মার্চে, তার জন্ম থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত আমার নিজের অর্থায়নে গড়ে তুলেছি, লেখাপড়া থেকে শুরু করে তার ব্যবসার জন্য টাকা পর্যন্ত আমি দিয়েছি। লালদিঘীর পাড়ে আমার বাবার ক্রয়কৃত জমি দুই শতকের মধ্যে কোর্টের রাস্তার জন্য জায়গা ছেড়ে দিলে দুই শতকের থেকে কমে যায়। সেখানে আমার মা ও আমরা দুই ভাই সাতবোন মিলে দশজন ঐ জমির মালিকানা হয়েছি। সে হিসাবে জামাল এখানে প্রায় এক কড়ার মালিক। অথচ জামাল আমাদের কাউকে না জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পিতার একটি জমি এককভাবে নিজ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করতেছে। বিভিন্ন জনের মাধ্যমে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সে সম্প্রতি ওই জমি আমাদের অজান্তে বেসিক ব্যাংকে বন্ধক রেখে এক কোটি টাকার লোন পাস করে নেয়। যার মধ্যে ১৫ লক্ষ টাকা উত্তোলনও করেছে সে। পরে যখন বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা আমাদের জমিতে সাইনবোর্ড লাগানোর জন্য আসে, তখন আমরা জানতে পারি এবং বাধা প্রদান করি। এবং তারা আমাদের যাবতীয় কাগজপত্র দেখে ফিরে যায়। আর এ জমি নিয়ে আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে, যার নং জিআর ১২৭/২০১৭। আদালতে মামলা থাকার পরেও ব্যাংক কর্মকর্তারা লোন দিলো কিভাবে?
জামাল আমাদের আদরের ও স্নেহের ছোট ভাই হওয়ার সুবাদে তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য আমার কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা ধার নেয়। ঐ টাকা দাবি করাই আমার কাল হয়ে দাড়িয়েছে জামাল। শুরু হয় নানা রকম হয়রানিমূলক মামলা। তারপর ভূয়া খতিয়ান তৈরি করে জমির মালিকানা দাবি করে বসে। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আর ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। শেষ পর্যন্ত আমাকে নানাভাবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াতে না পেরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আমাকে নিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে আমার সুনাম ক্ষুন্ন সহ আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।আমার একটি হোটেল আছে লাল দিঘীর পাড়ে। আহাসান বোর্ডিং। যা বেশ কিছুদিন ধরে ইসমাইল নামক একজনকে ভাড়া দিয়েছি। কিন্তু ইদানিং কিছু গনমাধ্যমে উক্ত হোটেলে ভাড়ার শর্ত ভঙ্গ করে অপকর্ম করার খবর আমার নজরে আসলে এ (অক্টোবর) মাসের ১ তারিখ থেকে ভাড়াটিয়া থেকে হোটেলটি নিয়ে ফেলি এবং তালাবদ্ধ করি। এখন আপনারা গিয়ে দেখতে পারেন হোটেলে তালা।
অন্যদিকে , আমি প্রবাস জীবনে হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে উপার্জিত টাকায় কিছু জমিজমার মালিক হলেও আমার ছোট ভাই কিসের টাকা দিয়ে কোটি টাকার মালিক তা জানিনা। ৩০ লক্ষ টাকার গাড়ীতে কি ভাবে চড়ে আমার বোধগম্য নয়। সে আমাকে ষড়যন্ত্র করে অনেক ক্ষতি করেছে।
অথচ আমার ছোট ভাই জামাল অবৈধভাবে যদি ইনকাম না করে কিভাবে কোটি টাকার মালিক হয়েছে? গড়েছে আলিশান বাড়ি গাড়ি ও ওয়াটার ভিউ রিসোর্টের ভাড়াটিয়া মালিক। যেই রিসোর্টে চলে নানাধরণের অনৈতিক অবৈধ কর্মকান্ড, সে-টাকায় আজ জামাল কোটিপতি।
আমি আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই।