ইমাম খাইর, সিবিএনঃ
রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইলিয়াস (৩৫) নামে আরও ১ জনকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।

রবিবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্প-৫ থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।

সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মোঃ নাইমুল হক।

তিনি জানান, আটক ইলিয়াসকে উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১ অক্টোবর দিবাগত রাতে জিয়াউর রহমান ও আব্দুস সালাম নামের দুই রোহিঙ্গাকে আটক করে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।

একই ঘটনায় আটক হন মধুরছড়া ৩ নম্বর ক্যাম্পের ডি-১৫ ব্লকের শওকত উল্লাহ (২৫)।

এর আগে দুপুর ১২ টার দিকে মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ প্রকাশ ওরফে লম্বা সেলিমকে আটক করে এপিবিএন।

এদিকে, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২ আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

রবিবার (৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় উখিয়া আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ শুনানী শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ড আদেশ পাওয়া আসামীরা হলেন- কুতুপালং ক্যাম্পের সি-ব্লকের বাসিন্দা নুর বশরের ছেলে সেলিম উল্লাহ ওরফে লম্বা সেলিম (২৭) ও মধুরছড়া ৩ নম্বর ক্যাম্পের ডি-১৫ ব্লকের রহিম উল্লাহর ছেলে শওকত উল্লাহ (২৫)।

এর আগে গত শনিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাদেরকে আদালতে উপস্থাপন করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল।
কক্সবাজার আদালত পুলিশের পরিদর্শক চন্দন কুমার সরকার জানান, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শনিবার ভোররাতে এবং শুক্রবার সকাল ও দুপুরে উখিয়া থানা পুলিশ এবং ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান পুলিশ (এপিবিএন) অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে। এদের সবাইকে জিজ্ঞাবাদ শেষে গ্রেফতার দেখিয়ে শওকত উল্লাহ ও লম্বা সেলিমকে শনিবার বিকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এসময় তাদের আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক শুনানীর জন্য রবিবার দিন ধার্য করেছিল। সেই মতে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শুনানি শেষে আদালত দুজনকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে কুতুপালং ক্যাম্পের লম্বাশিয়ায় মাস্টার মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২৫ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা করেন। যার মামলা নম্বর- ১২৬।

মুহিবুল্লাহ আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস নামে একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর এলাকার স্কুল শিক্ষক মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার, নিরাপদে দেশে প্রত্যাবাসন ও তাদের মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম তাকে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর’ হিসেবেও আখ্যায়িত করে।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জেলা পুলিশ ও এপিবিএনের টহল বাড়ানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) নাইমুল হক।