মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান)
লামায় সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে ধান সংগ্রহ-২০১৯ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল। আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি, উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মংহ্লাপ্রু মার্মা, লামা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল আলম, খাদ্য বিভাগের এএসআই উপচিং মার্মা সহ প্রমূখ। এসময় ধান বিক্রি করতে আসা বেশ কয়েকজন উপকারভোগী কৃষক উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রে জানা যায়, প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা হারে প্রতি মণ ১ হাজার ৪০ টাকা নির্ধারিত দামে ধান ক্রয় করছে সরকারি প্রতিষ্ঠান খাদ্য বিভাগ। খাদ্য বিভাগ সরাসরি এসব ধান সংগ্রহ করছে।
লামা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল আলম জানান, ২০ মে ২০১৯ইং হতে চলতি মৌসুমের বোরো ধান ক্রয় শুরু হয়েছে এবং এই ধান ক্রয় আগামী ৩১ অক্টোবর ২০১৯ইং পর্যন্ত চলবে। লামা খাদ্য গুদাম লামা পৌরসভা, গজালিয়া, লামা সদর, ফাঁসিয়াখালী, সরই, রুপসীপাড়া ইউনিয়নের কৃষক হতে মোট ৫৮ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া আজিজনগর খাদ্য গুদামে আজিজনগর ও ফাইতং ইউনিয়ন হতে ১৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। সরকারী কৃষি বিভাগের ‘কৃষি কার্ড’ রয়েছে এমন প্রতিজন কৃষক ১২০ কেজি থেকে শুরু করে ৩টন পর্যন্ত ধান বিক্রি করতে পারবেন। তবে ক্রয়কৃত ধানের উল্লেখিত মান অবশ্যই থাকতে হবে। গ্রহণযোগ্য ধানে আর্দ্রতা- ১৪%, বিজাতীয় পদার্থ ০.৫%, ভিন্ন জাতের ধানের মিশ্রন ৮%, অপুষ্ঠ ও বিনষ্ট ধান ২% ও চিটা ০.৫% সর্বোচ্চ থাকতে পারবে।
জানা যায়, কৃষকের কাছ থেকে নির্বিঘেœ ধান ক্রয় ও ধান সংগ্রহ কার্যক্রম মনিটরিং করতে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আহবায়ক করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা, প্রধান শিক্ষক নুনারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খতিব লামা কোর্ট জামে মসজিদকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
আজিজনগর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরমান উল্লাহ চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যে কৃষকরা বিক্রয়ের জন্য ধান আনতে শুরু করেছে। আমার কার্যালয়ে ২টি ইউনিয়ন হতে ১৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে।
লামা উপজেলা কৃষক স্বার্থ রক্ষা কমিটির সভাপতি মো. শাহজাহান বলেন, শতভাগ ধান যেন কৃষকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। তাহলে কৃষকরা ক্ষতি পুসিয়ে লাভের মুখ দেখতে পারবে। মিল মালিকদের কাছ থেকে যেন ধান নেয়া না হয়।
প্রসঙ্গত, সরকার ও মিল মালিকরা বোরো ধান সংগ্রহ না করায় উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে ধান বিক্রি করতে হয়েছে প্রান্তিক কৃষককে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কৃষকরা দেশব্যপী আন্দোলনে নামেন। অনেকে ধান ক্ষেতে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানান। ফলে ব্যাপক সমালোচনায় পড়ে সরকার। তারপরই সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করে সরকার।