আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :
বান্দরবানের আলীকদমে সম্প্রতি নারী নির্যাতন ও ইভটিজিং ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে বিচার চেয়েও নিস্তার পাচ্ছে না ভূক্তভোগীরা। ইভটিজিং এর ঘটনায় উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোজাহের মিয়ার দুইমেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। একই ইউনিয়নের মেজর জামান পাড়া নবম শ্রেণির এক ছাত্রী স্থানীয় বখাটের উৎপাতে স্কুলে যেতে পারছেনা। অপরদিকে, যাত্রীবাহী গাড়িতে স্কুলছাত্রী এবং নারী যাত্রীরা হয়রানী ও ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও শিক্ষক স্বামীর হাতে যৌতুকের দাবীতে একজন শিক্ষিকা স্ত্রী চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে নির্যাতিতা স্ত্রী মামলা দায়ের করায় বখাটে স্বামী স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে তার সুনামহানি করছেন বলে জানা গেছে। সোমবার (২৬ মার্চ) বিকেলে নির্যাতিতরা স্থানীয় প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের এসব নির্যাতনের ভয়াবহত বর্ণনা দেন।
প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ, বিগত ২০১৬ সাল থেকে চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের আলী মেম্বার পাড়ার মোজাহার মিয়ার পরিবারের মেয়েরা স্থানীয় একটি বখাটে চক্রের কাছে ধারাবাহিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। সর্বশেষ গত ৩ মার্চ এ পরিবারের এক কলেজ ছাত্রীকে লামা-আলীকদম সড়কের হরিণঝিরি এলাকায় গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে শ্লীলতহানি ও অপহরণের চেষ্টা চালায় বখাটে চক্রটি। পরে লামা থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে ছাত্রীটির ছিনিয়ে নেওয়া ব্যাগ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
পূর্ব শত্রুতার জেরে বখাটের উৎপাতে ও ধারাবাহিক নির্যাতনে এ পরিবারের একজন স্কুলছাত্রী ও একজন কলেজ ছাত্রী লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নির্যাতিতা ছাত্রীরা জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে স্থানীয় আব্দুল হাকিম, মো. শরিফ, শফিকুল ইসলাম গং বিভিন্ন সময় তাদের ইভটিজিং, শ্লীলতাহানি ও অপহরণের চেষ্টা করে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় তারা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুরাহা পাননি। এ নিয়ে গত ২০ মার্চ বান্দরবান পুলিশ সুপারের নিকট নির্যাতিতা কলেজ ছাত্রীটি ১৫ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কলেজ ছাত্রীটি সোমবার বিকেলে প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের জানান, সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তার এক বোন ও ভাবি মানসিক ভারসাম্য হারাতে বসেছেন। আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে ও বিবাদীদের হুমকীতে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেনা। বর্তমানে তারা নিরাপত্তাহীন।
অপরদিকে, চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের বাস সার্ভিসে সম্প্রতি এক স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানি এবং এক মহিলা যাত্রীকে মারধর ও মামলার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক মুচলেখা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। যানবাহনে স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় উৎকণ্ঠায় রয়েছেন অভিভাবকরা। সাম্প্রতিক ঘটনার জেরে এ সড়কে চলাচলকারী বাসে লামা থেকে আলীকদমে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের তোলা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের মেজর জামান পাড়ার শাহ জামালের বখাটে ছেলে শাহ জাহানের উৎপাতে স্থানীয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রী স্কুলে যেতে চরম বাধার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
লামা থানার এসআই জয়নাল জানান, লামা-আলীকদম সড়কের হরিণ ঝিরি এলাকায় গত ৩ মার্চ জনৈকা কলেজ ছাত্রীর সাথে সংগঠিত ঘটনাটি সত্য। অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কলেজ ছাত্রীর ব্যাগ ও ছিনতাই হওয়া মোবাইলটি উদ্ধার করে দিই।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।