আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়তে রাজি নয় সীমান্তের রোহিঙ্গারাও

এন কবির,বান্দরবান :
বান্দরবানের সীমান্তে আর্ন্তজাতিক সীমারেখায় (নোম্যান্স ল্যান্ডে) দিন দিন রোহিঙ্গাদের ভীড় বাড়ছে। নোম্যান্স ল্যান্ডের দক্ষিন-পূর্ব কোনাপাড়া, বড়ছনখোলা, সাপমারাঝিড়ি এবং ফুলতলী চারটি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরত প্রায় ২৫ হাজার রোহিঙ্গাদের আপাতত সরিয়ে নেয়া হচ্ছেনা। এসব রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক। এদিকে নোম্যান্স ল্যান্ডের আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়তে রাজি নয় অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও।
কোনা পাড়াস্থ নোম্যান্স ল্যান্ডে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা আব্দুল জব্বার আব্দুর শুক্কুর ও হাছি মিয়া বলেন, আমরা এখানে মোটামুটি ভালোই আছি। তবে কিছুটা খাবারের সংকট থাকলেও পানি, চিকিৎসা, ত্রান’সহ সবধরণের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি। কক্সবাজারের কুতুপালং আশ্রয় কেন্দ্রের প্রায় তিন কিলোমিটার ভিতরের ক্যাম্পে আমরা যেতে চাইনা। আর্ন্তজাতিক চাপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এখান থেকেই মিয়ানমারে ফিরে যাবো।
প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আর্ন্তজাতিক সীমারেখা নোম্যান্স ল্যান্ডে বড়ছনখোলায় ১৬শ পরিবার, লোকসংখ্যা আনুমানিক ৯৫০০ জন, শাপমারা ঝিড়ি ৬শ পরিবার, লোকসংখ্যা আনুমানিক ৪০০০ জন, ফুলতলী ৭৮ পরিবার, লোকসংখ্যা আনুমানিক ৫০০ জন এবং ঘুমধুম ইউনিয়নের দক্ষিন-পূর্ব কোনাপাড়ায় ১৫শ পরিবার, লোকসংখ্যা ৯০০০ জন। গতকয়েকদিনে মিয়ানমারের কাটাতারের বেড়া পেরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আরো ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ নতুন করে আশ্রয় নিয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী ও ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বান্দরবানে কোনো রোহিঙ্গা আশ্রয় কেন্দ্র নেই। বান্দরবানের সীমান্তে চারটি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরত রোহিঙ্গা আর্ন্তজাতিক সীমারেখায় নোম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান করছে। তবে খাদ্য সংকট’সহ মিয়ানমারের সেনাদের নির্যাতনে নতুন করে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকছে। কাটাতারের বেড়া পেরিয়ে গতকয়েকদিনে কম হলেও ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা সীমান্তের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। নোম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান করলেও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাহাযার্থে ঘুমধুমে ২টি এবং সদর ইউনিয়নে ২টি ত্রান সেন্টার খোলা রয়েছে। স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগের চারটি মেডিক্যাল টিমও।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, বান্দরবানের সীমান্তে নোম্যান্স ল্যান্ডে আর্ন্তজাতিক সীমারেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। সরকার সিদ্ধান্ত না নেয়া পর্যন্ত আপাতত আর্ন্তজাতিক সীমারেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সরানো হবেনা। এছাড়াও কুতুপালং ক্যাম্পের নতুন জায়গাগুলোও এখনো প্রস্তুত হয়নি। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খাবারের কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত ত্রান মওজুদ রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের কাছেও।

শনিবার থানচি যাচ্ছেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

বান্দরবান প্রতিনিধি;

গণপ্রজাাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি শনিবার সকালে থানচি সফরে যাচ্ছেন। সফরে তিনি সরকারী বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান মালায় যোগদানের করবেন। পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব সাদেক হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন- ২৮ অক্টোবর শনিবার সকালে প্রতিমন্ত্রী থানচি সফরে থানচি উপজেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে মাল্টিপারপাস হল নির্মাণ কাজ উদ্বোধন, উপজেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হোস্টেল উদ্বোধন ও ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী প্রদান, পিডবিল্টউডি এর তত্ত্বাবধানে থানা ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও ২৭অক্টোবর শুক্রবার প্রতিমন্ত্রীর বান্দরবান শহরের ডনবস্কো উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগদান এবং বান্দরবান সদরস্থ রোয়াংছড়ি বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানে যোগদান করার কথা রয়েছে।