হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :

টেকনাফের হ্নীলা এলাকায় পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে যে কোন ধরনের পাহাড়-টিলা কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও হ্নীলা ইউনিয়নের বিভিন্ন টিলা, পাহাড়ী জনপদে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও স্থানীয় ইয়াবা গডফাদারদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ যোগ-সাজশে পাহাড় কাটা চলছে। বনকর্মী-ভিলেজারদের রহস্যজনক আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে পরিবেশবাদীসহ সচেতনমহল।

জানা যায় হ্নীলা ইউনিয়নের মরিচ্যা ঘোনা, রোজার ঘোনা, আলী আকবর পাড়া, ভিলেজার পাড়া, পশ্চিম পানখালী, পূর্ব পানখালী, পশ্চিম সিকদার পাড়া, মইন্যারজুম, উলুচামরী, লেচুয়াপ্রাং, রঙ্গিখালী, আলীখালী, লেদা, মোচনী, নয়াপাড়া, জাদিমোরা ও দমদমিয়ায় নতুন করে বসতি স্থাপন এবং চাষাবাদের জমি তৈরীর জন্য পাহাড় ও টিলা কাটা অব্যাহত রয়েছে। এসব কাজে স্থানীয় বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ইয়াবা ব্যবসা করে কোটিপতি বনে যাওয়া ইয়াবা গডফাদারদের সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ উঠেছে। হ্নীলা মোরা পাড়ার ইয়াবা গডফাদার মোঃ ইসমাঈল ৩০/৩৫ জন শ্রমিক দিয়ে একটি পাহাড় কেটে বিলীন করছেন।

পাহাড় কাটার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারসমুহ আপত্তি জানালে ইয়াবা গডফাদার প্রকাশ্যে হামলা চালানোর জন্য মহড়া চালান বলেও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও উক্ত স্থানে আরও কয়েকজন বসতি গড়ার জন্য পাহাড় কাটছেন বলে জানা গেছে। এব্যাপারে হ্নীলা বিট কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও গত এক সপ্তাহ ধরে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

বন বিভাগের উপর মহলের চাপে মাঝে-মধ্যে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও পরবর্তীতে কিছু ভিলেজার এবং বনকর্মীদের সাথে আতাঁতের কারণে পাহাড় কাটা বন্ধ হয়না। হ্নীলা ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল উদ্দিন জানান, বন বিভাগের লোকজনকে ম্যানেজ করে অহরহ পাহাড় কাটা চলছে। ক্রেলের টেকনাফ সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান হাশেমী বলেন, পাহাড় কেটে বন ও পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম সত্যিই দুঃখজনক। হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান এইচকে আনোয়ার সিআইপি জানান, পাহাড় কাটা গুরুতর অপরাধ। তিনি স্থানীয় জনসাধারণের সচেতনার উপর গুরুত্বারোপ করেন। কক্সবাজার দক্ষিণের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দেওয়ান মুহাম্মদ আব্দুল হাই আজাদ বলেন, এসব বিষয় আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।