মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও, কক্সবাজার :

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান লে. ক. (অব.) ফোরকান আহমদ বলেছেন, শিক্ষক ও বিদ্যালয় কেন্দ্রিক দ্বন্দ্বের কারণে ও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এলাকার সম্ভাবনামীয় ছাত্রছাত্রীরা। দ্বিধা বিভক্তি আমাদেরকে নষ্ট করে দিচ্ছে। উন্নয়নে সবাইকে এক কাতারে আসতে হবে। ঘূষ, দূর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে হবে। যুব সমাজকে দূর্ণীতি ও মাদকমুক্ত কক্সবাজার গড়তে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি ২৮ জুন দুপুরে ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের ব্যবস্থাপনায় পুনর্মিলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফোরকান আহমদ বলেন, দূর্ণীতির জন্য মহাবিপদ সংকেত। তিনি কক্সবাজারকে পরিবর্তনের মাধ্যমে ঈদগাঁওকে ঢেলে সাজাতে হবে উল্লেখ করে বলেন, বৃহত্তর ঈদগাঁও কক্সবাজার সদরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু এখানকার লোকজনের মধ্যে একতা না থাকায় তারা অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কউক চেয়ারম্যান বলেন, তিনি যে কোন উপায়ে ঈদগাঁওকে উপজেলা ঘোষণা করেই ছাড়বেন। মিলনমেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঈদগাহ ফরিদ আহমদ ডিগ্রী কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা এতদ এলাকায় বিশ^বিদ্যালয় ও কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এ ব্যাপারে কউক চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিশেষ অতিথির আরো বক্তব্য দেন ঈদগাঁও চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম, সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপি উপদেষ্টা আলহাজ¦ মমতাজুল ইসলাম, বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা ফরাজী, বর্তমান প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম আলমগীর, ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জান্নাত, নাপিতখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শহিদুল হক, জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দীন, ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ খায়রুজ্জামান ও কউক চেয়ারম্যানের সহধর্মীনি জাকিয়া সুলতানা। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, আমাদের মধ্যে নৈতিকতার খুবই অভাব। যুব সমাজের নৈতিকতার অবক্ষয় হলে জাতির ভবিষ্যত অন্ধকার হয়ে পড়ে। মাদক, ইয়াবাসহ অন্যান্য অপকর্মের কারণে জেলাবাসীর মুখ এখনো মলিন। তিনি এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত জানিয়ে বলেন, কক্সবাজারের উন্নয়নে এর প্রকৃত বাসিন্দারা কোন কিছুই করতে পারেননি। সুযোগ পেলে তিনি ঈদগাঁওর উন্নয়ন ও কেজি স্কুলে এসএসসি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালাবেন উল্লেখ করে বলেন, আগামীতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অফিসে চাকুরীতে এতদ এলাকার ছেলেদের প্রাধান্য দেয়া হবে। তিনি আয়োজকদের অশালীন ও নিরাপত্তা বিঘিœত করে এমন কিছু না করে আনন্দ উপভোগের আহবান জানান। খুরশীদুল জান্নাত বলেন, শিক্ষার্থীদের সৎ, যোগ্য, নৈতিক ও আদর্শবান হতে হবে। দেশ ও এলাকা প্রেমিক হতে হবে। ভেদাভেদ ভুলে সকলকে শ্রদ্ধা করতে হবে। অন্য বক্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে কারো কোন ক্ষতি না করে মিলেমিশে জনকল্যাণে কাজ করতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আহবান জানান। মিলনমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য, ২০০২ ব্যাচের শিক্ষার্থী, তরুণ লেখক আরিফ উল্লাহ আরিফ অনুষ্ঠানের থিমসং তৈরি করেন। এসময় দর্শক সারিতে ছিলেন ঈদগাঁও ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আলহাজ¦ আবদুচ ছালাম, বিদ্যালয়ের শিক্ষক এনামুল হক, মনছুর আলম, শাহিমা বেগম, নুরুল ইসলাম, শহিদুল্লাহ সিকদার, আক্তার কামাল, নুরুল মোস্তফা, অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমদ মহসিন, কবি হুমায়ুন সিদ্দিকী, কবি মনির ইউছুপ, প্রাবন্ধিক জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ, ঈদগাঁও নিউজ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম। এর আগে দিনব্যাপী মিলনমেলার উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি কামরুল হক চৌধুরী। আনন্দ র‌্যালীর মাধ্যমে দিনব্যাপী এ উৎসবের শুভ সুচনা হয়। আনন্দ র‌্যালীতে নেতৃত্ব দেন উৎসবের প্রধান অতিথি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান লে. ক. (অব.) ফোরকান আহমদ, ঈদগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম, ঈদগাহ ফরিদ আহমদ ডিগ্রী কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা ফরাজী, বর্তমান প্রধান শিক্ষক এ.কে. এম আলমগীর, নাপিতখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শহিদুল হক, ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ মো. খায়রুজ্জামান। এছাড়াও ছিলেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আবু শামা, আওয়ামীলীগ নেতা নুুরুল মোস্তফা, সিনিয়র শিক্ষক সুলতান আহমদ, ইংরেজী শিক্ষক মনছুর আলম, অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমদ মহসিন, ঈদগাঁও প্রেসক্লাব সভাপতি মো. রেজাউল করিম, ক্রীড়া শিক্ষক নুরুল আমিন, তারিকুল ইসলাম জনি, সংবাদকর্মী নাছির উদ্দীন পিন্টু, আবু হেনা সাগর। মিলনমেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক শফিকুল ইসলাম ও সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থাপনায় গৌরবের ৩০ বছর পদার্পন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির ৯৫ থেকে ২০১৭ ইংরেজি সালের বিভিন্ন ব্যাচের ৮ শতাধিক ছাত্রছাত্রীরা অংশ নেন। তাদের সহায়তায় ছিল ১০ শ্রেণিতে বর্তমান অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। ‘এসো মিলি হৃদয়ের বন্ধনে …..’ শীর্ষক আনন্দ শোভাযাত্রাটি ব্যান্ড দল সহকারে কেজি স্কুল মাঠ থেকে শুরু হয়ে বাসস্টেশন অতিক্রম করে বাজারের প্রধান সড়ক ডিসি রোড হয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিস বাক হয়ে হাসপাতাল ও তরকারি বাজার সড়ক অতিক্রম করে পরে মাছ ও পান বাজার সড়ক দিয়ে ডিসি রোড দিয়ে ভেন্যূ স্থল কেজি স্কুল মাঠে পৌঁছে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জেলা যুবদল সদস্য আলমগীর তাজ জনি, সদর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল হক রিকো, থানা যুবদল সাধারণ সম্পাদক কামাল হোছাইন, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবু হেনা বিশাদ, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি বেলাল উদ্দীন বেলাল, সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দীন জনি, ছাত্রদল নেতা জুবাইদুল ইসলাম জুয়েল, কামাল উদ্দীন, হাইস্কুল শিক্ষক মোহাম্মদ আলম, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মামুন অর রশিদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল হুদা, যুবদল নেতা আরিফ উল্লাহ আরিফ, স্বাস্থ্য সহকারী রীপন দে, পোকখালী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বেলাল উদ্দীন, ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোক্তা আবুল মনছুর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াস মাহমুদ, শহিদুল করিমকে দেখা গেছে। এছাড়াও ছিলেন রিয়াদুল হক, শফিউল আলম শান্ত, আবছার কামাল সোহেল, মোর্শেদুল করিম, আবদুল গফুর, নুরুল হুদা মাল্টিমিডিয়া, শাহিন উদ্দীন, মাহমুদ আল মক্কি, জসিম উদ্দীন, ইরফানুল করিম, শরিফুল ইসলাম রনি, নুরুল হক ব্যাংকার, মোস্তফা ফারুক, ফরিদুল আলম, আনিসুর রহমান, আমান উল্লাহ, মিটন আচার্য্য প্রমুখ। শেষে অতিথিদের সম্মাননা দেয়া হয়। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হক ও আবুল মনসুর আহমদ। নামাজ বিরতি ও প্রীতিভোজের পর একটানা রাত ৮টা পর্যন্ত দেশের অন্যতম স্বনামধন্য ব্যান্ড প্রতিষ্ঠান তীরন্দাজ মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করে। যার নেতৃত্বে ছিল তীরন্দাজের কর্ণধার শাহেদ।