ওমর ফারুক, উখিয়া:

উখিয়ায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবিরগুলো থেকে প্রতিদিন শত শত টন ময়লা-আবর্জনা উৎপন্ন হলেও এর সঠিক নিষ্পত্তি নেই। এসব বর্জ্য কোথায় যাচ্ছে, কীভাবে ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে-তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

জাতিসংঘ ও এনজিও সূত্রে জানা যায়, উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে প্রতিদিন গড়ে ১০০ টনেরও বেশি বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে খাবারের উচ্ছিষ্ট, প্লাস্টিক, পলিথিন ও চিকিৎসাসংক্রান্ত বর্জ্যও রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব ময়লা নালা ও খাল উপচে ফসলি জমিতে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে স্থানীয় কৃষিজমি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

উখিয়ার বালুখালী ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের সামনে দিয়ে যাওয়া খাল বয়ে পানিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য অনুমান করলে প্রাই ৬০০থেকে ১০০০টন বর্জ্য স্থানিয় জনবসতি চাষাজমিতে ও খালে। বর্ষামৌসুমে স্থানিয়দের অবস্থা ভয়ানক।
অতিরিক্ত বর্জ্যের কারণে বিভিন্ন জায়গা থেকে আশা পানি স্থানিয়দের ঘর উঠে পড়ে। কারণ বর্জ্যের কারণে খাল ভরাট হয়েগেছে।

কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, বর্জ্যের দুর্গন্ধ ও রাসায়নিক পদার্থে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। প্রায় দুই শত একর জমি ইতোমধ্যে বর্জ্যে ঢেকে গেছে।যার মধ্যে রয়েছে ছোট ছোট কাল ও নদী।

ক্যাম্প ২০ এক্সটেনশনে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (UNDP) উদ্যোগে একটি ল্যান্ডফিল স্থাপন করা হলেও সেটি পর্যাপ্ত নয়। বর্তমানে “অমনি প্রসেসর” নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিদিন ১০–১১ টন বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, পানি ও ছাই উৎপাদনের কাজ চলছে, তবে সেটিও সীমিত পরিসরে।

ডিএসকে এনজিওর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যাম্পের অধিকাংশ বর্জ্য এখনো অস্থায়ীভাবে পুড়িয়ে ফেলা হয় বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে জমা করা হয়-যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।

বিডি ক্লিন উখিয়া টিম পরিদর্শনে গিয়ে তারা বলেন,“প্রতিদিন যত ময়লা উৎপন্ন হয়, তার অল্প অংশই প্রক্রিয়াজাত হয়। বাকিটা মাটির নিচে, খালে বা বৃষ্টির সঙ্গে আশপাশে মিশে যায়। অথচ এসবের কোনো স্থায়ী সমাধান নেই। উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শত শত টন ময়লা আবর্জনা হজম হচ্ছে কোথায়? জানতে চান তিনি।

তিনি আরো বলেন,”আমরা বিডি ক্লিন উখিয়া টিম, এটির উদ্দ্যোগ নিয়েছি অনতত খালটা হলে ও পরিষ্কারের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তবে আমাদের কোন ফাউন্ড নেই, এই ময়লা অপসারণ করতে আমাদের বেশ লজিস্টিক প্রয়োজন।

যদি এনজিও ও উপজেলা প্রশাসন আমাদের সহযোগীতা করলে আমরা ময়লা অপসারণ করতে সাক্ষম হব।

উখিয়ার সচেতন ব্যাক্তিরা বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য এখন শুধু মানবিক সংকট নয়-এটি পরিবেশগত বিপর্যয়েরও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসকে এনজিওর কর্মকর্তা বলেন,আমরা ইউনিসেফ ফাউন্ডে কাজ করি,তবে আমাদের যতটুকু সাধ্য আছে আমরা চেষ্টা করতেছি ময়লা অপসারণ করতে। তবে আমাদের যতেষ্ট পরিমান লজিস্টিক ও লোক প্রয়োজন।

এই বর্জ্যের স্থান পরিদর্শনে যান, দেশের সর্বোবৃহত্তম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উখিয়া টিমের একদল ও ডিএসকে এনজিওর ওয়াস প্রজেক্ট এর সিনিয়র ব্যাক্তিরা।