ইমাম খাইর, সিবিএন:
কক্সবাজার জেলায় প্রায় ৯ লাখ ৬ হাজার ৫৫৪ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদানের লক্ষ্যে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন। মাসব্যাপী এই কর্মসূচিতে জেলার ২,৯৩৬টি টিকাদান কেন্দ্রে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে টিকা দেওয়া হবে।
সিভিল সার্জন অফিসের তত্ত্বাবধানে ৩০১ জন স্বাস্থ্য সহকারী ও ১,০৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই টিকাদান কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
এই ক্যাম্পেইন সফল করতে সাংবাদিকদের নিয়ে এক কনসালটেশন ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয় ৯ অক্টোবর সকালে জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জেলা তথ্য অফিসার মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার স্বাগত বক্তব্যে টিকা সংক্রান্ত গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “টাইফয়েড জ্বর থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে সরকারের ইপিআই কর্মসূচির আওতায় ১২ অক্টোবর থেকে টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে যারা অনলাইনে নিবন্ধন করেছে, তারাই টিকা পাবে। তবে কর্মসূচির শেষ দিন পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ থাকবে।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমরান হোসাইন সজীবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে টাইফয়েড সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদুল হক জানান, “এই টিকাদান কর্মসূচি থেকে কোনো শিশু বাদ যাবে না। রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য আলাদা কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। অতীতে সরকারি টিকাদান নিয়ে নানা গুজব ছড়ানো হলেও এবার ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়ার গুজবে কান দেওয়া যাবে না।”
তিনি গুজব রটনাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
টাইফয়েড সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দেন কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, “এই গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন সফল করতে প্রেসক্লাব ও সাংবাদিকরা সার্বিক সহযোগিতা করবে।”
ওয়ার্কশপে জানানো হয়, জেলায় টাইফয়েড টিকাদানের ৭০ শতাংশ নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে, তবে কক্সবাজার পৌরসভা এলাকায় নিবন্ধন কিছুটা পিছিয়ে আছে।
ক্যাম্পেইনের সফল বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্তের হার অনেক বেশি। কক্সবাজারেও আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে এবং সবাইকে টিকাদান কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইদুজ্জামান চৌধুরী, ইউনিসেফ প্রতিনিধি আতাউল গনি ওসমানী, এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
