পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় সাংবাদিক পরিবারের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমি দখল করে গভীর রাতে ঘর নির্মাণের অভিযোগে আবুল কালাম বাহাদুর (৫০) নামের এক এজাহারভুক্ত আসামিকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌমুহনী এলাকা থেকে তাকে আটক করে পেকুয়া থানা পুলিশ। তিনি রাজাখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও মৃত আবুল কাশেমের পুত্র। মামলায় তিনি এক নম্বর আসামি হিসেবে চিহ্নিত।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাদের ভোগদখলীয় জমি স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল দখলের পাঁয়তারা করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১৭ আগস্ট রাতের আঁধারে ওই জমিতে অবৈধভাবে কাঠ ও টিনের নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে অভিযুক্তরা।

পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ১৮ আগস্ট পেকুয়া থানায় রফিকুল ইসলাম নামের একজন ভুক্তভোগী মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১৭ মামলার আসামিরা হলেন, পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবুল কাশেমের পুত্র আবুল কালাম বাহাদুর (৫০), একই গ্রামের  মৃত বশত আলীর পুত্র রবিউল আলম (৪৫), মৃত বশত আলীর পুত্র মোহাম্মদ রফিক (৫২), মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র  বদিউল আলম (৫৫) ও মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র সিদ্দিক আহমেদ (৫০)। এছাড়া মামলায় আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

পেকুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) উগ্যজাই মারমা বলেন, “সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি আবুল কালাম বাহাদুরকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক জমি দখল করে রাতারাতি ঘর নির্মাণের চেষ্টা করেছেন।”

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা জানান, “গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে রোববার চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হবে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।”

উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট জমিটি ১৯৫৮ সালে খাজনা অনাদায়ের কারণে সরকারের নিলামযোগ্য তালিকায় পড়ে। এরপর ১৯৬০ সালে ৩৮ নম্বর মানিজারী মোকদ্দমার মাধ্যমে কক্সবাজার মুন্সেফ আদালত থেকে ছিদ্দিক আহমদ নামের এক ব্যক্তি ওই জমি নিলামে খরিদ করেন।

পরে ১৯৭০ সালে ছিদ্দিক আহমদ তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে জমিটি রমিজ আহমদ নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন এবং দখল হস্তান্তর করেন। এরপর তা বি.এস ১৩৫০ নং খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হয়। রমিজ আহমদের মৃত্যুর পর তার সন্তানরা ওয়ারিশ সূত্রে জমিটির মালিকানা পান। তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতে বসবাস ও ভোগদখল করে আসছেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের দাবী, “আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি হঠাৎ করে একটি চক্র রাতের আঁধারে দখলের চেষ্টা চালায়। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাদের একটি অংশ ধরা পড়লেও বাকিরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”