মনসুর আলম মুন্না :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ সরকারি পাঠ্যবই ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনমনে নানান প্রশ্ন ও গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার (১৬ আগস্ট) দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার উম্মাহাতুল মুমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় আগুনের সূত্রপাত ঘটে। খবর পেয়ে চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দীর্ঘ চেষ্টা চালিয়ে সকাল ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এর আগেই মাদ্রাসায় সংরক্ষিত কয়েক লক্ষাধিক বই সম্পূর্ণরূপে পুড়ে যায়।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি বই ছিল এসবের মধ্যে। ক্ষতিগ্রস্ত বইয়ের সঠিক সংখ্যা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কীভাবে ঘটলো এ অগ্নিকাণ্ড?
প্রাথমিকভাবে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে এত বিপুল সংখ্যক সরকারি বই মাদ্রাসার কক্ষে সংরক্ষণ নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবুল হোসেন আনসারী বলেন,
“মাদ্রাসার ৪টি কক্ষে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম স্যার প্রায় তিন বছর ধরে সরকারি বই মজুদ করে রেখেছিলেন। আমরা একদিকে শ্রেণিকক্ষের সংকটে ভুগছি, অন্যদিকে এসব কক্ষ ব্যবহার করতে পারছিলাম না। বিষয়টি সাবেক ইউএনও মহোদয়কেও জানানো হয়েছিল।”
শিক্ষা কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে গুঞ্জন
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শিক্ষা কর্মকর্তার ভূমিকা ও বিপুল পরিমাণ বইয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। তাদের অভিযোগ, এ ঘটনায় গোপনীয়তা রক্ষার চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রশাসনের তদন্ত শুরু
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ন দেব।
তিনি বলেন,
“অগ্নিকাণ্ডে বিপুল সরকারি বই পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তলব করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এদিকে পুরো ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা গুঞ্জন চলছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন— কেন সরকারি পাঠ্যবই এতদিন মাদ্রাসার কক্ষে মজুদ রাখা হয়েছিল? এসব বইয়ের প্রকৃত ব্যবহার নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন তারা।
