পেকুয়া প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বলেছেন, ন্যায়বিচার, ইনসাফ ও সাম্য প্রতিষ্ঠা করে “সোনার বাংলাদেশ” গড়াই এখন সময়ের দাবি। রাজনৈতিক দমন-পীড়ন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে দল প্রস্তুত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তাঁরা।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন পর্যায়ের এক কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল ফারুক। টইটং ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আনছার উল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হেদায়েত উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, “স্বাধীনতার পর ৫৪ বছর পার হলেও দেশে আজও প্রকৃত অর্থে ন্যায়ভিত্তিক কোনো শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দেশ পরিচালনার নামে একশ্রেণির রাজনৈতিক গোষ্ঠী জনগণের রক্ত চুষে বিদেশে সেকেন্ড হোম বানিয়েছে। আজ সময় এসেছে ইনসাফভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার।”
তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট দেশের মানুষ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, এটি একটি প্রতীকী পতন। এখন সময় দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও মুনাফেকির রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। ঢাকার মিডফোর্ড এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় সোহাগকে জীবন দিতে হয়েছে—এ ঘটনা প্রমাণ করে, রাষ্ট্রব্যবস্থা আজও মাফিয়াচক্রের হাতে জিম্মি।”
বক্তারা চকরিয়া-পেকুয়ায় জামায়াতের অতীত সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন—যা তাঁদের মতে, দলের সাংগঠনিক শক্তির একটি প্রমাণ।
মাওলানা হেদায়েত উল্লাহ বলেন, “পেকুয়া-চকরিয়ায় জামায়াত আজও একটি গণভিত্তিক সংগঠন। ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা ও জনকল্যাণে আমরা কাজ করছি এবং আগামীতেও করব।”
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য মাস্টার আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা জামায়াতের উলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা এ.এইচ.এম. বদিউল আলম, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আজগর আলী, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নুরুল কবির, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক নুরুজ্জামান মঞ্জু এবং উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি হাসান শরীফ চৌধুরী।
সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি জিয়াউল হক শফিকী। ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সভাপতি ও সেক্রেটারিরাও এতে অংশ নেন।
সম্মেলনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী একদিকে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য একটি সাংগঠনিক বার্তা দিতে চেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, জাতীয় রাজনীতিতে জামায়াতের অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও মাঠপর্যায়ে সংগঠনটি এখনো তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
