এম. মনছুর আলম, চকরিয়া :
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জননেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে কক্সবাজারে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) নেতা নাছির উদ্দিন পাটোয়ারীর কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে চকরিয়া পৌরশহরে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি, এনসিপির পূর্বনির্ধারিত পথসভা ভণ্ডুল করে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের জনতা শপিং সেন্টারে এনসিপির সভামঞ্চে ক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে সভাস্থল ভণ্ডুল করে দেন।
পরে তারা মিছিলসহকারে পৌরশহরের মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এ ঘটনায় পৌর এলাকায় কিছু সময়ের জন্য থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়ায় বিএনপির সহযোগী সংগঠনের ৩-৪ জন কর্মী আহত হয়েছেন বলে বিএনপির শীর্ষ নেতারা দাবি করেছেন।
শনিবার বিকেলে এনসিপির চকরিয়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শ্লোগানে জনতা শপিং সেন্টারে পথসভার আয়োজন করা হয়। সভায় এনসিপির যুগ্ম মুখ্যসচিব নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল।
এর আগে দুপুরে কক্সবাজার শহরে এক পথসভায় নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন,
“আওয়ামী লীগের আমলে নারায়ণগঞ্জে বিখ্যাত গডফাদার শামীম ওসমান ছিল। এখন শুনছি কক্সবাজারের নব্য গডফাদার শিলং থেকে এসেছে। ঘের দখল করছে, মানুষের জায়গা দখল করছে, চাঁদাবাজি করছে, আবার নাকি সে সংস্কার বোঝে না। আমরা বলেছি, কক্সবাজারের জনতা সংস্কারবিরোধী, যারা পিআর বোঝে না, তাদেরকে রাজপথে দেখিয়ে দেবে ইনশাআল্লাহ।”
বক্তব্যটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে চকরিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমেদের অনুসারী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জড়ো হয়ে জনতা শপিং সেন্টারে ট্রাকের ওপর নির্মিত মঞ্চ ভেঙে দেন এবং মাইকে শব্দ বন্ধ করে দেন। এ সময় এনসিপির নেতাকর্মীরা মঞ্চ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, “এনসিপি নেতার উদ্ধত বক্তব্য আমরা মেনে নেব না। তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে। এই দাবিতে চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষ ফুঁসে উঠেছে।” তিনি কর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
এদিকে, কক্সবাজারে সভা শেষে এনসিপি নেতারা মহাসড়ক হয়ে চট্টগ্রামে ফেরার পথে ফাঁসিয়াখালী আর্মি ক্যাম্প এলাকায় অবস্থান নেন। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় সাজোয়া যান দিয়ে তাদের চকরিয়া অতিক্রম করিয়ে দেওয়া হয় বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চকরিয়া উপজেলা এনসিপির নেতা মো. সাজ্জাদ হোসাইনের মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এনসিপি নেতাদের সেনাবাহিনীর সহায়তায় চকরিয়া পার করিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
