মো. আরকান, পেকুয়া:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কক্সবাজারের প্রবীণ রাজনীতিবিদ সালাহ উদ্দিন আহমদকে “গডফাদার” বলে অভিহিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল। এই মন্তব্যের প্রতিবাদে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্থানীয় বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর উদ্যোগে শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৫টায় পেকুয়া চৌমুহনীস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে পেকুয়ার প্রধান সড়ক পদক্ষিণ করে সদর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল এনসিপি নেতা নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী ওরফে “ডার্বি নাসির”-এর একটি বক্তব্য, যেখানে তিনি সালাহ উদ্দিন আহমদকে “গডফাদার” উপাধি দিয়ে কটূক্তি করেন। এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনীতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
পথসভায় বক্তারা বলেন, “একজন জাতীয় রাজনীতিবিদকে নিয়ে এমন ভাষা ব্যবহার শুধু ব্যক্তি সালাহ উদ্দিন আহমদকেই নয়, পুরো কক্সবাজারবাসীকেই অপমান করেছে। এটি কেবল রাজনৈতিক শিষ্টাচার নয়, সামাজিক ভদ্রতারও চরম লঙ্ঘন।”
বক্তারা আরও বলেন, “সালাহ উদ্দিন আহমদ বিএনপির দুর্দিনে রাজপথে ছিলেন, কারাবরণ করেছেন, নিখোঁজ ছিলেন—এমন একজন নেতাকে হেয় করার চেষ্টা সরাসরি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ওপর আঘাত।”
তারা এই বক্তব্যকে “সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির অপচেষ্টা” হিসেবেও অভিহিত করেন।
পথসভা থেকে আয়োজকেরা তিনটি দাবির কথা জোরালোভাবে উপস্থাপন করেন—
১. ডার্বি নাসিরকে তাঁর কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ও নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
২. ভবিষ্যতে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট করার পাঁয়তারা রোধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, কক্সবাজারের রাজনৈতিক ঐতিহ্য বহুদিনের, এখানে বিভাজনমূলক মন্তব্য কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বশীল আচরণ ও সহনশীলতা অনিবার্য।
বিক্ষোভ ও সমাবেশে যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
তাদের স্লোগানে উঠে আসে সালাহ উদ্দিন আহমদের প্রতি সমর্থন, নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং কক্সবাজারের সম্মান রক্ষার দৃপ্ত উচ্চারণ।
এই প্রতিবাদের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। অনেকে বিষয়টিকে ব্যক্তি আক্রমণের চেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলেও দাবি করেছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, যা যদি কেন্দ্রীয়ভাবে নিষ্পত্তি না করা হয়, তাহলে কক্সবাজারের রাজনৈতিক ময়দানে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
