বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার ;

আমির হামজা সিকদার—কক্সবাজারের রাজনীতির এক সাহসী নাম, অকুতোভয় একজন জাতীয়তাবাদী সৈনিক। দীর্ঘদিন তিনি জড়িত ছিলেন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন এই রাজনীতিক, যিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন নিরলসভাবে।

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের কুলিয়াপাড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া এই সাদা মনের মানুষ রাজনীতি করেছেন নির্লোভ, নির্ভীক চিত্তে। বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংগঠনের দায়িত্বে থেকেও কখনো ব্যবহার করেননি ক্ষমতার দাপট। সাদাসিধে জীবনযাপন ছিল তাঁর পরিচয়—লুঙ্গি পরে চলতেন, ছিলেন সব শ্রেণির মানুষের কাছে সহজে পৌঁছানো একজন মানুষ।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আজীবন বিশ্বস্ত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ সালাহউদ্দিন আহমেদের ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা। দলীয় নেতৃত্বের প্রতি তাঁর আনুগত্য ছিল নিঃস্বার্থ। এ কারণে কেবল কক্সবাজারেই নয়, জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের কাছেও তিনি ছিলেন একজন প্রিয় কর্মী। তাঁর মৃত্যুর পর ২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছিল বড় পরিসরের স্মরণসভা—যা আজো তাঁর প্রতি রাজনৈতিক শ্রদ্ধার সাক্ষ্য দেয়।

এই অকুতোভয় নেতার স্মৃতি এখনো কাঁদায় সহকর্মীদের। তাঁর মতো নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর শূন্যতা আজো অনুভব করেন জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষও।

আমির হামজা সিকদারের পুত্র মো. সোলাইমান বাদশা বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয়। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। খুরুশকুল ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তিনি দলীয় বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন নিবেদিতভাবে, বজায় রেখেছেন পিতার মতো জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক।

আগামী ৫ আগস্ট পালিত হবে আমির হামজা সিকদারের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। এই দিনে অনেকেই স্মরণ করবেন এক নিঃস্বার্থ, সাহসী এবং মানবিক রাজনীতিককে। সচেতন নাগরিকদের আশা—আমির হামজার মতো সাদা মনের নেতৃত্বই হোক আগামী রাজনীতির দিশা।