রোহিঙ্গা সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান না হলে এটি দ্রুতই আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকিতে পরিণত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার উপর দারিদ্র্য, উন্নয়ন ঘাটতি ও সংঘাতের প্রভাব’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। তবে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই সংকট এখন শুধু মানবিক নয়, এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং নিরাপত্তা ইস্যুতেও পরিণত হয়েছে।”
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারের নিশ্চয়তার ভিত্তিতে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তরুণদের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তারুণ্য বারবার পরিবর্তনের অগ্রভাগে থেকেছে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক গণআন্দোলন পর্যন্ত তরুণরাই নেতৃত্ব দিয়েছে। তবে তারা যদি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, তাহলে চরমপন্থায় ঝুঁকে পড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদি দারিদ্র্য, বৈষম্য ও উন্নয়ন ঘাটতি সংঘাত ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। এসব মোকাবিলায় শান্তি ও উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে একত্রে বিবেচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এসময় উপদেষ্টা বিশ্বনন্দিত অর্থনীতিবিদ ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘তিন শূন্য’ (শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ) দর্শনের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই লক্ষ্য অর্জনে সামাজিক ব্যবসা একটি কার্যকর মাধ্যম হতে পারে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল ও পিসবিল্ডিং কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির আহ্বান জানান, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
সভায় বাংলাদেশ ছাড়াও সুইডেন, উরুগুয়ে, পূর্ব তিমুর, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
