এম.মনছুর আলম,চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় টানা ভারি বর্ষণে মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে পাহাড়ি ঢলে ও বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাতটার দিকে মাতামুহুরী নদীর পানি হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বেশকিছু নীচু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এতে বর্তমানে উপজেলার অন্তত বিশটি গ্রামের প্রায় পনেরো হাজার জনসাধারণ জনদুর্ভোগে পড়ে। যেভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে টানা আর দু’য়েক দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম জানিয়েছেন, টানা ভারী বর্ষণের
কারণে বৃহস্পতিবার সকালে মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসছে পাহাড়ি ঢল। পানির প্রবল স্রোতে তাঁর ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা তলিয়ে গেছে। দুপুর নাগাদ সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের অনেকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গিয়ে লোকজন চরম ভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান জানান, পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে তাঁর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, পহরচাঁদা অংশে বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকছে ঢলের পানি। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের নীচু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। নদীতে ঢলের পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তাঁর ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তীসহ আটটি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পানিবন্দি পরিবার গুলো চরম ভোগান্তিতে পড়ছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে রাতের মধ্যে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগির চৌধুরি জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টিপাতে মাতামুহুরী নদীতে পাহাড়ি ঢল নামার কারণে পৌরসভার কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে নদীর ঢলের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। নদীতে ভাটির সময়ে ওইসব এলাকা থেকে জমিয়ে থাকা পানি নিচের দিকে সরিয়ে নিতে পৌরসভার পক্ষ থেকে লোকজন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়ন ইউপি চেয়ারম্যান জামাল হোসেন চৌধুরি জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণের ফলে তাঁর ইউনিয়নের বেশিরভাগ নীচু এলাকা হাঁটু সমান পানিতে জমে গেছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে উপজেলার চিংড়িজোনের হাজার হাজার মৎস্য প্রকল্প পানিতে তলিয়ে যাবে। এতে ঘের মালিক ও চাষীদের হাজার কোটি টাকার ক্ষতিসাধনের আশঙ্কা রয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: ফখরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। উপজেলার কোন জায়গায় নদীর পানির প্রভাবের ফলে কোন ধরনের বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। উপকূল এলাকার সকল ধরনের স্লুইসগেট খোলা রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।
