আব্দুস সালাম,টেকনাফ (কক্সবাজার) :
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেস আসছে। এমন অবস্থায় টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্তে বসবাসকারী বাসিন্দারা।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান টেকনাফের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। বিকেল পর্যন্ত শতাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়ার সীমান্তের বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, সকালে তিনি বাড়ির উঠানে বসে ছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনে ভয় পেয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়েন। বিস্ফোরণের শব্দে মাটি কেঁপে উঠে। পরে বুঝতে পারেন মিয়ানমারে বিস্ফোরণ হয়েছে।

হোয়াইক্যং খারাংখালীর সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, ‘বিকট শব্দে বাড়িতে থাকাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব সময় ভয়ে থাকি কখন মর্টারশেল বাড়িতে এসে পড়ে।’

টেকনাফের হ্নীলার বাসিন্দা রশিদুল আলম লবণ মাঠে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, সকাল থেকে যেভাবে বিস্ফোরণ হচ্ছে তাতে এলাকার লোকজন খুবই আতঙ্কে। তিনিসহ স্থানীয় শ্রমিকেরা কেউ লবণ মাঠে কাজ করতে যেতে পারেননি।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মো. শাহ জালাল বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে সংঘাত কিছুদিন কমেছিল। কয়েক দিন ধরে আবারও শুরু হয়েছে।’

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, মিয়ানমারে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণ এখন প্রতিদিনই হচ্ছে। সীমান্তের বাসিন্দাদের তাই সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়।

হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্ব দিকে মিয়ানমারের বলিবাজার, শিলখালী, নাফপুরা গ্রামে সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর পেয়ে এপারে টেকনাফের হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, কয়েকদিন বিরতির পর রাখাইনে নতুন করে গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। সকাল থেকেও মর্টারশেল, গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একই সাথে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।