শাহজাহান চৌধুরী শাহীন :

আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কক্সবাজার পৌসভার ১২ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচন। এই ওয়ার্ডের জনপ্রিয় কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মোর্শেদ আহম্মেদ বাবু গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার মৃত্যুতে ওয়ার্ডবাসী তাদের একজন অভিভাবককে হারান।
কাউন্সিলর বাবুর মৃত্যুর পর এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদ শুন্য হওয়ায় উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ছোট ভাই প্রয়াত কাউন্সিলর কাজী মোর্শেদ আহম্মেদ বাবুর পদে উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারই বড় ভাই আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মোস্তাক আহম্মেদ শামীম।
স্থানীয়রা জানান, বঙ্গবন্ধুর আর্দশের এক পরীক্ষিত সৈনিক ছিলেন ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রয়াত কাজী মোর্শেদ আহম্মেদ বাবু। তিনি কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সবার কাছে বাবুু ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন, গরীবের বন্ধু, ন্যায় পরায়ন মানুষ ছিলেন তিনি। নেতা থেকে জনসেবকও হন বাবু। কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনে ১২ নং ওয়ার্ডবাাসী তাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেন। জনগণ তাকে নির্বাচিত করে মহাখুশি ছিলেন। ন্যায় পরায়ন ও গরীবের বন্ধু মুর্শেদ বাবু অকালে মারা যাওয়ায় ১২ নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের মানুষ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েন।
এই ওয়ার্ডবাসী কাজী পরিবারের বড় সন্তান কাজী মোস্তাক আহম্মেদ শামীমের মাঝেই প্রয়াত কাউন্সিলর কাজী মুর্শেদ আহমেদ বাবুকে খুঁজছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, তাদের বাবা মরহুম কাজী তোফায়েল আহম্মেদও ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আর্দশের পরীক্ষিত সৈনিক। আমৃত্যু তিনি কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এলাকার মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন কাজী তোফায়েল আহম্মদ।
কক্সবাজার শহরে যেই ক’ জন আওয়ামীলীগ নেতাকে (জীবিত ও মৃত নেতা ) মানুষ এখনো শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন, তাদের মধ্যে কাজী তোফায়েল আহম্মেদও একজন। এই জনপদে আন্দোলন সংগ্রামে সবার অগ্রভাগে থাকেন ১২ নং ওয়ার্ডের কাজী পরিবারটি। আওয়ামী পরিবার হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত ও পরিচিত। রাজপথে আন্দোলন, লড়াই সংগ্রামে এই কাজী পরিবারে অবদান কম নয়। পিতা আ.লীগ নেতা কাজী তোফায়েল আহম্মেদের মৃত্যুর পর তার সন্তানেরা একে একে হাল ধরেন আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ রাজনীতিতে। তৃণমুল থেকে ওঠে আসা মুজিব আর্দশের সারথিরা কাজী শামীম, কাজী মুর্শেদ, কাজী রাসেল আওয়ামী লীগের জেলা, পৌরসভা ও ওয়ার্ডে নেতৃত্বও দেন। কাজী মোর্শেদ বাবু নেতা থেকে জনসেবার ব্রত নিয়ে চলে আসেন জনতার কাতারে।
জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে কাজী মোর্শেদ বাবু ১২ নং ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
পর্যটন শহরে এই ১২ নং ওয়ার্ডটির কদরও আলাদা। পর্যটনে ঘেরা এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকাটির উন্নয়নে অনেক কাজ করে গেছেন তিনি।
এলাকাবাসী জানান, গত ২০১৯ সালে করোনা কালীন সময় সম্মুখসারীর যোদ্ধা হিসেবে ভুমিকা পালন করেন কাউন্সিলর কাজী মোর্শেদ বাবু ।
কক্সবাজার ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন এর সভাপতি ও চট্রগ্রাম বিভাগীয় ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন এর সহ সভাপতি ও কক্সবাজার -এর স্বনামধন্য রংধনু ডেইরির স্বত্বাধিকারী কাজী মোরশেদ আহমেদ বাবু ২০১৯ সালে কঠোর লকডাউনে কর্মহীন হয়ে খাদ্য সংকটে পড়া মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দিয়ে সাধারণ মানুষের নজর কাড়েন। সরকারী ত্রাণের আশায় তিনি বসে থাকেননি, নিজের ডেইরি ফার্মের গরু বিক্রির টাকায় অসংখ্য পরিবারে মাঝে গভীর রাতে অত্যন্ত নীরবে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন বাবু।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েও ১২ নং ওয়ার্ড বাসীকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি।
১২ নং ওয়ার্ড বাসীর কাছে অতি প্রিয় মানুষটি চলতি বছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে যান। ১২ নং ওয়ার্ড বাসী হয়ে পড়েন অভিভাবকহীন। সর্বত্র বিরাজ করে শোকের ছায়া।
তার মৃত্যুতে কক্সবাজারের রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ হারান তৃণমূল থেকে উঠে আসা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন পরীক্ষিত সৈনিককে, জনগণ হারান তাদের প্রিয় অভিভাবকে।
কাজী মোর্শেদ আহম্মেদ বাবু তার বাবার মতো আমৃত্যু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশকে ধারণ করে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।
এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও গরীব দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে তার অবদান ১২ নং ওয়ার্ডবাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
১২ নং ওয়ার্ডের ফাতের ঘোনা, লাইটহাউস পাড়াসহ আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা জানান,
অকাল প্রয়াত কাউন্সিলর কাজী মোর্শেদ বাবুর মৃত্যুতে শুন্য হয়ে পড়ে ১২ নং কাউন্সিলর পদটিতে আগামী ২৮ নভেম্বর উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রয়াত মোর্শেদ আহম্মেদ বাবুর পদে কাজী পরিবার থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন বাবুর বড় ভাই কাজী মোস্তাক আহম্মেদ শামীম। তিনি পাঞ্জাবী প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। কাজী শামীম কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক। এলাকায় তারও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। প্রয়াত কাউন্সিলর কাজী মোর্শেদ বাবুর শুন্যতা ১২ নং ওয়ার্ডবাসী তার বড় ভাই কাজী মোস্তাক আহম্মেদ শামীমের মাধ্যমেই পুর্ণ করতে চাইছেন।
২০২০ সালে করোনার প্রকোপ শুরু হলে সরকার ঘোষিত প্রথম লকড়াউনে যখন সবকিছু নিস্তব্ধ ঠিক ওই মুহূর্তে সরকারের নিয়ম কানুন মেনে এই হৃদয়বান ব্যক্তি কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম ঘরে বসে না থেকে নিজের অর্থায়ন থেকে যতটুকু সম্ভব দিন রাত প্রবল ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে ১২নং ওয়ার্ডেবাসী ও নিজ এলাকার মানুষকে সচেতন করা, ঈদের সময় গরীব অসহায় দিনমজুর মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ,খাবার বিতরন, নগদ অর্থ প্রদান, নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ড়াল, মাছ, শাকসবজিসহ নানারকম মানবিক কার্যক্রম পালন করেন।
উপনির্বাচনে জয়ে লক্ষ্য কাজী শামীম কলাতলি, সৈকতপাড়া, ফাতেরঘোনা, বাদশাঘোনা, লাইট হাউস পাড়াসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা পাড়ায় পাড়ায়,গনসংযোগ করছেন। কাজী বাবুর এলাকায় অসমাপ্ত উন্নয়মুলক কাজগুলো তিনি এগিয়ে নিতে চান। প্রতিদিন গণ সংযোগে কয়েক শত কর্মী, তার সর্মথক ও সাধারণ ভোটাররা অংশ নিচ্ছেন।
তাকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন নারী ও পুরুষ ভোটাররা।
কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী মোস্তাক আহম্মেদ শামীম জানান, আমার ছোটভাই কাউন্সিলর কাজী মোর্শেদ আহম্মেদ বাবু দীর্ঘদিন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। এই এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা ধরনের ভোগান্তি থেকে এই ওয়ার্ডের বিশাল জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করেছেন। আমার ছোট ভাই বাবু যা করেছে তা শুধু এলাকার মানুষের জন্য করেছে, নিজের জন্য কোন কিছু করেননি। এলাকাবাসীকে নিরাপদ ও শান্তিতে রেখেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে ১২ নং ওয়ার্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাব। ভোটারদের সুখে দুঃখে পাশে থাকব। এছাড়াও দলমত নির্বিশেষে উন্নয়নের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করে পাঞ্জাবী প্রতীকে ভোট দিয়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়নে শরীক হওয়ার আহবান জানান তিনি।
তিনি ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং আধুনিকায়নের ঘোষণা দেন।
এদিকে, জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম ১২ নং ওয়ার্ডে উপ নির্বাচনে পাঞ্জাবী প্রতীক নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন।
কক্সবাজার পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একই ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর কাজী মোর্শেদ আহমেদ বাবু অসুস্থ জনিত কারণে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় মৃত্যু বরণ করলে এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদ শুন্য হয়। পরে এই ওয়ার্ডে উপ নির্বাচন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৮ নভেম্বর ১২ নং ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
অকাল প্রয়াত কাউন্সিলর কাজী মুর্শেদ আহমেদ বাবুর বড় ভাই কাজী পরিবার থেকে উপ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মোস্তাক আহম্মেদ শামীম ( প্রতীক পাঞ্জাবি)। তাকে জয়যুক্ত করে প্রয়াত কাজী মুর্শেদ বাবুর অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো সম্পন্ন করার সুযোগ দেওয়ার আহবান জানান ভোটাররা।