নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রামু উপজেলার চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকদের হুমকি ধমকির শিকার নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম সিকদার। প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণায়। প্রচারণা ঘিরে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনাও ঘটে গেছে। আনারস প্রতীকের পক্ষে ভাড়াটে সন্ত্রাসী ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের কারণে ভোটের মাঠে নতুন আতংক বিরাজ করছে। নষ্ট হচ্ছে নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ। নৌকায় ভোট দিলে ‘ঈমান চলে যাবে’ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তার সর্মথকেরা। এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নুরুল ইসলাম সিকদার।
তিনি পশ্চিম চাকমারকুল এলাকার মৃত নুর আহমদের ছেলে নজিবুল আলম (৩৩), মৃত কবির আহমদের ছেলে শাহাব উদ্দিন (৪০), আলমগীর (৩৫), মাওলানা আবদুর রহিমের ছেলে আবদুর রাজ্জাক (৪২) এবং সাহেদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিসহ আরো ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গৃহীত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ৮ নভেম্বর মিয়াজিপাড়ার মোহাম্মদ শাহর বাড়ির পাশে প্রচারণাকালে বিদ্রোহী (আনারস) প্রার্থীর লেলিয়ে দেয়া সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদারের স্ত্রীকে কটূক্তি, তিরস্কার ও শ্লীলতাহানি করে। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে রামু থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রার্থীর স্ত্রীর ব্যবহারের মোবাইল, নগদ প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। ছিঁড়ে ফেলে হ্যান্ডবিল ও পোস্টার। বিভিন্ন সময় নৌকার প্রার্থীর বাসাবাড়িতে গিয়ে হুমকি প্রদান ও কর্মী সমর্থকদের মারধর করে।
নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম সিকদার অভিযোগে লিখেছেন, আনারস প্রার্থীর প্রচারণাকালে অবৈধ অস্ত্র সঙ্গে রাখেন। লাঠিসোঠা দা, ছুরি, কিরিস, লোহার রড, প্রদর্শনপূর্বক শোডাউন করে। ভীতি ও আতংক ছড়াচ্ছে ভোটারদের মাঝে। নৌকায় ভোট দিলে ‘ঈমান চলে যাবে’ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। উপজেলা যুব লীগের অর্থ সম্পাদক হয়েও নৌকার বিপক্ষে অবস্থান ও অপবাদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল ইসলাম সিকদার।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৮ অক্টোবর শ্রীমুরা পথসবায় যাওয়ার পথে শাহমদেরপাড়া স্টেশনে নৌকার প্রচারণার গাড়ি আটকিয়ে রাখে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন। ৪ নভেম্বর কলঘর বাজার মাতবর পাড়ায় পথসভায় যাওয়ার সময় ৪/৫ সন্ত্রাসী মোটর সাইকেলযোগে গিয়ে ধাক্কা দেয়। এতে ৮ জন মতো আহত হয়। পরের দিন ৫ নভেম্বর রাত ৮ টার দিকে মাতবর পাড়া স্কুলের সামনে প্রার্থীর ছোট ভাই রাইহানুল ইসলাম সোহেলকে প্রায় আধাঘণ্টা আটকিয়ে রাখে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা।
এছাড়া ভোটের দিন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে কেন্দ্র দখলের আশংকা করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল ইসলাম সিকদার। তার মতে, জারাইলতলী উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব মোহাম্মদ পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীমুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহমদের পাড়া মক্তব, পশ্চিম চাকমারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক ও কঠোর হতে আবেদন করেছেন নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম সিকদার। এ বিষয়ে গত ৭ নভেম্বর পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে পুলিশ। কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না। এমনকি কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।