ডেস্ক নিউজ :

বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৪৭ সালে শুধু ধর্মের উপর ভিত্তি করে ১৫০০ মাইল দুরে অবস্থিত পাকিস্তানের সাথে বাঙালী জাতিকে পুর্ব পাকিস্তান নাম দিয়ে পাকিস্তানের সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তানীদের সাথে বাঙ্গালী জাতির ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য কোন কিছুতেই মিল ছিল না। তাই ১৯৪৭ এর পর পরই পাকিস্তানী শাসকরা আমাদের ভাষার উপর আঘাত করেছিল। ১৯৫২ সালে সালাম, বরকত, রফিক, জাব্বার, শফিকসহ অনেকের রক্তের বিনিময়ে আমাদের ভাষার অধিকার আদায় করতে হয়েছিল। যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত। নেতৃবৃন্দ বলেন, পাকিস্তানীরা আমাদের শুধু শাসন ও শোষণ করেছিল। আমাদের সব অধিকার তারা হরণ করেছিল। ২৩ বছরের ইতিহাসে প্রায় প্রতি বছরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে জাতি আন্দোলনরত ছিল। বঙ্গবন্ধুকে প্রায় ১৬ বছর কারাগারে বন্দী রেখেছিল। ৬৬ সালের ৬ দফা, ৬৯ সালের গণঅভ্যূথান, ১৯৭০ এর নির্বাচন, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছিলাম।

নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা জাতির পিতাকে স্ব-পরিবারে হত্যা করে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্টের পর পাকিস্তানী দোসরা জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সাথে একাকার হয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু করে। তারা পাকিস্তানী কায়দায় দেশ শাসন করে এবং স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করে। দেশকে পুনরায় পুর্ব পাকিস্তান বানাতে তৎপর হয় রাজাকার, আল বদরের সংগঠন জামায়াতে ইসলামসহ ১৯৭১ এর পরাজিত শক্রুরা। তারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের পরিবর্তে পুরস্কৃত করেছিল।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে জননেত্রী শেখ হাসিনা কুখ্যাত ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার শুরু করেন। ১৯৭১ সালে যারা দেশ বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থেকে মানুষ হত্যা করেছে, ধষর্ণ করেছে, অগ্নি সংযোগ করেছে তাদের বিচার শুরু করেছেন। ৩রা নভেম্বর জাতীয় ৪ নেতাদের হত্যাকারীদের বিচার শুরু করেছেন। বর্তমানে তাদের বিচার শেষ হয়েছে। অনেকের ফাঁসি হয়েছে, অনেকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। যারা বিদেশে পালিয়ে রয়েছে তাদের ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে দেশের অর্থনীতি, উন্নয়ননীতি, শিক্ষানীতি, খাদ্যনীতিতে শেখ হাসিনা ব্যাপক পরিবর্তন এনে দেশব্যাপী বিভিন্ন মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন এবং যার সুফল দেশবাসী পেতে শুরু করেছে ঠিক তখনই ১৯৭১ এর পরাজিত শত্রু এবং বিভিন্ন নির্বাচনে পরাজিত সংগঠন গুলো এক হয়ে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা সাম্প্রদায়িক অপ-শক্তিকে দিয়ে জাতির পিতার ভাস্কর্যে আঘাত করেছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন ১৯৭১ এর পরাজিত শক্তি এবং বি.এন.পি সহ সাম্প্রদায়িক অপ শক্তি গুলো সব সময় আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকারের প্রতি ষড়যন্ত্র করে। জাতি বার বার তাদের প্রতিহত করে এবং নির্বাচনে তারা পরাজিত হয়। বাঙালী জাতি ১৯৭১ সালে যেমন সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করেছিল তেমনি বর্তমানে ও তাদের প্রতিহত করে চলছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করেই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় এসেছিল।

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে কক্সবাজার শহীদ দৌলত ময়দানে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন-জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন, রেজাউল করিম, সায়মুম সরওয়ার কমল এম.পি, আশেক উল্লাহ রফিক এম,পি, মাহাবুবুল হক মুকুল, এড. রনজিত দাশ, নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, ইউনুছ বাঙ্গালী, এড. তাপস রক্ষিত, কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম, হেলাল উদ্দিন কবির, জিয়া উদ্দিন চৌধুরী, জি.এম. কাসেম, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি নজিবুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর, শ্রমিক লীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার, যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হামিদা তাহের, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক সোহেল, যুব মহিলা লীগ সভাপতি আয়েশা সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক তাহমিনা চৌধুরী লুনা, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু মোঃ মারুফ আদনান, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ পরিমল কান্তি দাশ, আসিফুল মওলা প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম.এ. মনজুর।

সভায় উপস্থিত ছিলেন-জেলা আওয়ামী লীগ নেতা-এড. বদিউল আলম সিকদার, জাফর আলম চৌধুরী, এড. ফরিদুল আলম, ড. নুরুল আবছার, শফিউল আলম চৌধুরী, মিজানুর রহমান, শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনছারী, সরুপম পাল পাঞ্জু, বেন্টু দাশ, শোয়েব ইফতেখার, এড. একরামুল হুদা, মৎস্যজীবি লীগ নেতা মোঃ তৈয়ব, সৈয়দ আকবর, আবদুল হক, ফোরকান আহমদ, শাহাব উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মেহেদী রহমান, ওসমান গণি টুলু, আতিক উল্লাহ, সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, এ.বি. সিদ্দিক খোকন, রফিক মাহমুদ, মিজানুর রহমান, শাহনেওয়াজ চৌধুরী, জানে আলম পুতু, নজরুল ইসলাম, ওয়াহেদ মুরাদ সুমন, মেজবাহ উদ্দিন কবির, জাফর আলম, বজল করিম, নুর আহমদ, কাউন্সিলার শাহেনা আক্তার পাখি, রেবেকা সুলতানা আইরিন, মোর্শেদুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, আবদুল্লাহ আল মাসুদ আজাদ, হাবিব উল্লাহ, তাজ উদ্দিন, আবদুল মজিদ সুমন, আজিমুল হকসহ পৌর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ওলামা লীগ সভাপতি মাওলানা নুরুল আলম সরকার।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে সূর্যদ্বয়ের সাথে সাথে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মাল্যদান, সকাল ৮.৩০ মিনিটে পবিত্র শহীদ মিনারে পুষ্পস্তর্বক অর্পন, সকাল ৯টায় বধ্যভুমিতে পুষ্পর্স্তবক অর্পন করা হয়।