মুহাম্মদ উল্লাহ মাহদী:
আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে যত দিন সৃষ্টি করেছেন সব চাইতে সর্বোত্তম দিন হলো জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন। আসুন জেনে নিই কোরআন ও সুন্নার আলোকে।
আল্লাহ বলেনঃ
﴿بِسۡمِ اللهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِيۡمِ ﴾
لِّيَشۡهَدُوۡا مَنَافِعَ لَهُمۡ وَيَذۡكُرُوۡا اسۡمَ اللّٰهِ فِىۡۤ اَيَّامٍ مَّعۡلُوۡمٰتٍ عَلٰى مَا رَزَقَهُمۡ مِّنۡۢ بَهِيۡمَةِ الۡاَنۡعَامِۚ فَكُلُوۡا مِنۡهَا وَاَطۡعِمُوۡا الۡبَآٮِٕسَ الۡفَقِيۡرَ﴾
তোমার কাছে আসবে, যাতে এখানে তাদের জন্য যে কল্যাণ রাখা হয়েছে তা তারা দেখতে পায়। এবং তিনি তাদেরকে যেসব পশু দান করেছেন তার উপর কয়েকটি নির্ধারিত দিনে আল্লাহর নাম নেয়। নিজেরাও খাও এবং দুর্দশাগ্রস্ত অভাবীকেও খাওয়া ও।
(সূরা হাজ্বঃ২৮)
এ মাসের নির্দিষ্ট কয়েক দিন অর্থ, সাহাবায়ে কেরাম জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন যেন আল্লাহ কে অধিক পরিমাণ স্মরণ করা হয় সেটি উল্লেখ করেছেন।
সূরা আল ফজরে ও এই দশ দিনের বিশেষ ফজিলতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।যে ব্যক্তি বরকত ও কল্যাণ চায় সে যেন আল্লাহর সাথে ব্যবসা করে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়।
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন দশ দিনের চাইতে আর কোন আমল উত্তম হতে পারেনা। সাহাবায়ে কেরাম বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ আল্লাহর পথে জিহাদ করা ও কি। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ জিহাদের চাইতে ও উত্তম।
তবে যে ব্যক্তি তার মাল ও জান নিয়ে জিহাদে অংশ গ্রহণ করেছে কিন্তু আর ফিরে আসেনি সে ব্যক্তির কথা ভিন্ন।( বুখারীঃ৯৬৭)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় আর কোন দিন নেই এই দিন গুলির চাইতে। এই দিনে বেশী বেশী তাহমিদ, আলহামদুলিল্লাহ, তাহলিল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, তাকবির আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিতেন। (মুসনাদে আহমদ ৬১৫৪) সহীহ হাদীসে এসেছে আরাফার দিনের রোজা শ্রেষ্ঠতম রোজা, আল্লাহ এ দিনে যত পরিমাণ বান্দাহকে ক্ষমা করেন তা অন্য কোন দিনে করেন না। সুবহানাল্লাহ!
বিশিষ্ট তাবেঈ আবু ওসমান আন নাহদী বলেন সাহাবায়ে কেরাম রমজানের শেষ দশ দিন, জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন,মহররম মাসের প্রথম দশ দিনের মত অধিক পরিমাণ আমল আর কোন সময় করতেন না। সহীহ বুখারীতে এসেছে আবু হুরায়রা রাঃ ও আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ শুধু বাজারে গমণ করতেন এবং উচ্চ স্বরে তাকবির দিতেন। আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত আর দিন নেই যে দিনে আল্লাহ এত বেশী খুশি হন। আসুন কি ভাবে আমরা আমল করতে পারি।
(০১)সালাত আদায়, কোরআন তেলোয়াত,হাজ্ব করা, সাদকা করা, সওম পালন, নফল ইবাদত, বেশী বেশী দরুদ পাঠ করা, তাসবিহ করা, মা বাবার খেদমত করা,
ইস্তেগফার করা, তাওবা / ক্ষমা চাওয়া।
(০২) আমলে সালেহ করা, অসহায় মানুষের কল্যাণ করা, বিপদে সাহায্য করা, খুশি করা, ইহসান করা, অপরের জন্য দোয়া কামনা করা। অনেক লোক আছে বাইরের মানুষের সাথে ভাল আচরণ করে, ইবাদত বন্দেগী করে, কিনৃতু নিজের স্ত্রী, পরিবার পরিজনের সাথে মা বাবার সাথে খারাপ আচরণ করে যা তার আমল কে বিনষ্ট করে দিবে।
(০৩) তাকবির বলা সদা সর্বদা অনবরত ১ থেকে ১৩ আইয়ামে তাশরীকের সময় পর্যন্ত।
সুনির্দিষ্ট সময় ফজরের সালাতের পর আরাফার দিন ফজর থেকে বড় বড় করে তাকবির দেওয়া। ৯- ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত।
উম্মে সালামা রাঃ বর্ণনা করেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জিলহজ্জ মাসের ১- ১০ দিন পর্যন্ত কুরবানি যারা করবেন তাদের নখ, চুল, পশম, কাটা জায়েজ নেই হারাম। তা নিষেধ করা হয়েছে।
হে আল্লাহ আমাদেরকে এই পবিত্র দিনের সময় গুলিতে বেশী বেশী ইবাদত করার মাধ্যমে তোমার নৈকট্য অর্জন করার তাওফিক দিন, আমিন।
জিলহজ্জ মাসের অত্যধিক মর্যাদা, ফজিলত ও গুরুত্ব
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।