মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

‘অধস্তন আদালত ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণে আইন ও বিচার বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প’ এর আওতায় দুই সপ্তাহের শর্ট কোর্সে অংশ নিতে আগামী শনিবার ৯ নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ। বিষয়টি কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আশেক এলাহি শাহাজাহান নূরী সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ সহ বিচার বিভাগীয় সিনিয়র ৩০ কর্মকর্তা এই কোর্সে অংশ নিতে রাষ্ট্র কর্তৃক চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটিতে আগামী ১০ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় এই প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণের জন্য এ কর্মকর্তাদের মনোনীত করা হয়েছে।

কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ কুমিল্লা জেলার ১১৬, বজ্রপুরে ১৯৭৪ সালের ১ জুন জম্মগ্রহন করেন। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ হতে এইচএসসি পাশ করেন কৃতিত্বের সাথে। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইন বিষয়ে কৃতিত্বের সাথে অনার্স ও রেকর্ড সংখ্যক মার্ক পেয়ে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সাথে বিসিএস (জুডিসিয়াল) এ উত্তীর্ণ হয়ে তিনি বিচার বিভাগে যোগ দেন। এটি ছিল বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের আগে পিএসসি’র অধীনে সর্বশেষ জুডিশিয়ারি বিসিএস। আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ ১৯৯৮ সালের ২০ জুলাই দেশের বিচার বিভাগে সরকারি চাকুরীতে যোগ দিয়ে বিচারবিভাগের একজন গর্বিত সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। বিচার বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ চট্টগ্রাম জজশীপের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থাকাবস্থায় সেখান থেকে বদলী হয়ে ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যোগ দিয়ে অদ্যাবধি সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কুমিল্লার বজ্রপুরের মোঃ আজিজ উল্লাহ ও মেহবুব আরা’র গর্বিত সন্তান আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাঈমা শারমিন নিপু’কে জীবনসঙ্গিনী হিসাবে বেচে নেন। নাঈমা শরমিন নিপু কুমিল্লার একটি বেসরকারি কলেজে অধ্যাপনায় রত আছেন। বিচারক তৌফিক ও অধ্যাপক নিপু দম্পতি ৩ কন্যা সন্তানের গর্বিত জনক ও জননী।
কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ প্রশিক্ষণে অস্ট্রেলিয়া অবস্থানকালে কক্সবাজারের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার বিশ্বাস ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক বিভাগ সিবিএন-কে জানিয়েছেন।

কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ সহ বিচার বিভাগীয় গুরুত্বপূর্ণ এই আন্তর্জাতিক কোর্সের জন্য মনোনীত ৩০ বিচারক আগামী ৯ নভেম্বর শনিবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা হজরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে। আর ২৬ নভেম্বর বা তার কাছাকাছি সময়ে তাঁরা দেশে ফিরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয়ের বিচার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শাহাবুদ্দিন সিবিএন-কে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক মানের এই প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত বিচারকেরা হলেন-কিশোরগঞ্জের জেলা জজ মো. সাইদুর রহমান খান, দুদকের মহাপরিচালক (আইন) মো. মফিজুর রহমান ভূঁইয়া, সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ শেখ মো. মফিজুর রহমান, চট্টগ্রামের প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সদস্য (জেলা ও দায়রা জজ), ফারুক আহমেদ, নরসিংদীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. জুয়েল রানা, রাজশাহীর শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান (জেলা ও দায়রা জজ) নুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবির, কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. সোলায়মান। কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলহাজ্ব মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ, সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম, মুন্সিগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এএম জুলফিকার হায়াত, ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, নরসিংদীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রকিবুল ইসলাম, খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. ইয়ারব হোসেন, সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সালমা খাতুন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা কামাল, যশোরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহাদাত হোসেন, নীলফামারীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদুল হক, পঞ্চগড়ের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির সরকার। পিরোজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিপতি কুমার বিশ্বাস, ঢাকার যুগ্ম মেট্রোপলিটন সেশন জজ মো. মোশাররফ হোসেন, নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামীমা আক্তার, ময়মনসিংহের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ হুমায়রা তাসমীন, খুলনার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) নির্মলেন্দু দাস, গাজীপুরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ লুতফুল মজিদ নয়ন, খুলনার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এম.এ সাঈদ, খাগড়াছড়ির মুহাম্মদ খুরশীদুল আলম সিকদার, যশোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আকরাম হোসেন। হাইকোর্ট বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান, শরীয়তপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অন্তরা ঘোষ ও শেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম।

এছাড়া, আগামী ১০ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ১২তম ব্যাচের প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণের জন্য অপেক্ষমান হিসেবে আরও ১৩ কর্মকর্তাকে মনোনীত করা হয়েছে। তারা হলেন-সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক এসএম জিয়াউর রহমান, আইন ও বিচার বিভাগের সংযুক্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আজিজুল হক, টাঙ্গাইল জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুম, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস আরা, মেহেরপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিরিন নাহার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আহমেদ, নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিল্টন হোসেন।
কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ ইউনুস খান, রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্নিগ্ধা রাণী চক্রবর্তী, গোপালগঞ্জ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ জাকির হোসেন টিপু ও ফেনী জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা তাহমিনা আফরোজ চৌধুরী।