মুহাম্মদ শাহ জাহান, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেঃ
পুলিশ ভেরিফিকেশন ও ডেমুতে অাটকে গিয়ে অামিরাতে প্রায় ২ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশী বৈধ হওয়ার স্বপ্ন ধূলিস্যাত হতে চলেছে। অাগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে এ পাসপোর্ট না পেলে প্রবাসীদের কপালে দুঃখ ছাড়া কিছুই আসবেনা।
এ নিয়ে সয়ং মিশন কর্মকর্তারাও রয়েছে বিচলিত হলেও অাগারগাও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ঘুম এখনো ভাঙ্গেনি। হাজারো প্রবাসীর অার্তনাদের অাওয়াজ পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও পুলিশ বিভাগের বিশেষ শাখা (এসবি)র কানে পৌঁছেছে কিনা কারো জানা নেই।

এদিকে শত শত প্রবাসী পাসপোর্ট না পেয়ে প্রতিদিন ধর্ণা দিচ্ছে অাবুধাবী বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাইস্থ বাংলাদেশ কন্সূলেটে। মিশন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোন সুদুত্তর না পেয়ে তারা হতাশ হয়ে পরেছেন। প্রবাসীদের কেউ কেউ নিকটস্থ কাউকে পাঠিয়ে অাগার গাও পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশে ধর্না দিয়ে কিছু পাসপোর্ট নিয়ে অাসতে পারলেও বাকিরা উপায়ান্তর না দেখে ঘুরে বেড়াচ্ছে দূতাবাস ও কন্সূলেট প্রাঙ্গনে। মিশন কর্মকর্তারা ও বিষয়টি সুরাহার জন্য প্রতিনিয়ত চিঠি পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে। কিন্তু এখনো কোন অাশানূরুপ ফলাফল পাওয়াযায়নি বলে জানাযায়।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান পরিস্থিতি সামাল দিতে অারো এক মাস সময় চেয়ে অামিরাত সরকারের নিকট চিঠি দিয়ে রেখেছেন। তবে এ অাবেদন অাসলে অামিরাত সরকার গ্রহন করবে কিনা তা দেখার অপেক্ষায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা।

এদিকে দুবাইস্থ বাংলাদেশ কন্সুলেট বাংলাদেশে পুলিশ ভেরিফিকেশনে অাটকে থাকা ৭৮৫ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

এ তালিকায় সবচেয়ে বেশী অাটকে থাকা পাসপোর্টের সংখ্যা চট্টগ্রামের প্রবাসীদের। পরিসংখ্যানে দেখা যায় চট্টগ্রাম ১৭৩), কুমিল্লা ১৪৭), কক্সবাজার ৬৪), হবিগঞ্জ ৪১), সিলেট ৪০), লক্ষিপুর ২৭), মৌলভী বাজার ২৪), ঢাকা ২৬),বি.বাড়িয়া ২২), ময়মনসিং ১৬), নোয়াখালী ১৫), গাজীপুর ১৫), মানিকগঞ্জ ১৪), নারানগঞ্জ ১৩)ফরিদপুর ১২),সুনামগঞ্জ ৮), টাঙ্গাইল ৯),শ্রিপুর ২), সরিয়তপুর ৬),রাজশাহী ২)পটুয়াখালী৫),পাবনা২),নাটোর ২),নাওগা১),মেহের পুর ১),মাগুরা ১).মাদারীপুর ১),কুষ্টিয়া৩),কিশোরগঞ্জ ৬),খুলনা২).জয়পুরহাট ১),জিনাইদাহ৩),ঝালকাটি ২)যশোর ৬),গোপালগঞ্জ ৩).গাইবান্ধা১),ফরিদপুর৬)দিনাজপুর ১),চুয়াডাঙ্গা ৮),চাপাইনবাগন্জ ৭),চাঁন্দপুর ৯),বগুরা১),ভোলা১),বরিশাল ৯),বরগুনা ৩).বান্দরবন ১),বাগেরহাট২)।

এ পরিসংখ্যান শুধু যারা কন্সূলেটে এসে অভিযোগ করেছেন তাদের। এর বাইরেও অাবুধাবী দূতাবাসের পরিসংখ্যান এবং অন্যান্য মিলে বিপর্যয়ে পড়া প্রবাসীর সংখ্যা প্রায় ২০০০ হাজারের মত।

দুবাইস্থ বাংলাদেশ কন্সূলেট প্রাঙ্গনে অপেক্ষারত প্রবাসীদের সাথে কথা বলে জানাযায় তারা একেক জন সাধারণ ক্ষমার অাওতায় বৈধ হতে গিয়ে এম অার পি পাসপোর্টের জন্য কন্সূলেটে পাসপোর্ট বিভাগে অাবেদন করার সময় প্রায় ৩ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে। কেউ কেউ পুলিশের কাছে গিয়ে তদবিরও করেছে। কারো কারো ক্ষেত্রে পুলিশ রিপোর্ট অাগারগাওয়ে পাঠানো হয়েছে কিন্তু অনলাইন সিস্টেমে পুলিশ এপ্রুবেল দেখানো হলেও অাসলে এ পাসপোর্টের হদিস কোথায় তা যেন কারো জানা নেই। এভাবে অনিশ্চয়তার দোলাচলে সাধারণ প্রবাসীদের ভাগ্য ঝুলে অাছে অাগরগাঁওয়ের পাসপোর্ট অধিদপ্তরে।অপেক্ষমান প্রবাসীদের ক্ষোভের ভাষা পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও পুলিশের ঘুম কবে ভাঙ্গবে?

বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাদের বক্তব্য:
অামাদের কাজ অামরা সম্পন্ন করেছি।এখন অার কি করার অাছে? পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের গাফেলতির দায় অামরা কেন নেব?
ভুক্তভোগিদের প্রশ্ন হলো, তাহলে কে নেবে এ দায়িত্ব? অাসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ২ হাজার প্রবাসীর বুক ফাটা কান্না কে শুনবে?
তা দেখতে অপেক্ষায় অামিরাতে অবস্থানরত প্রায় ১০ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশী ও বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের পরিবার পরিজন।
প্রবাসীদের দাবী, এ মূহুর্তে সরকারের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত।