নুরুল কবির, বান্দরবান:

বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী খাজনা আদায়ের উৎসব রাজ পূন্যাহ মেলা। বৃস্পতিবার দুপুরে মেলা উপলক্ষ্যে একটি শোভাযাত্রা বোমাং রাজার বাসভবন থেকে শুরু হয়ে রাজার মাঠের মূল অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে শেষ হয়।

১৪০তম এই রাজপূন্যাহ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বত্তৃতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আইনী জটিলতা আইনী ভাবে সমাধান করতে হবে। খালেদা জিয়াকে মিথ্যাচারের জন্য শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয় দেশবাসীর কাছেও ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশে কোন মধ্যবর্তী নির্বাচন হবেনা। মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবী করে বিএনপি মধ্যবর্তী তামাশা শুরু করেছে। এসময় তিনি বর্তমান সরকার আমলেই শান্তি চুক্তির পুন বাস্তবায়নসহ বান্দরবানে ভূমি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বোমাং রাজাকে শুভেচ্ছা জানান।

এর আগে বেলা ১২টায় একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বোমাং সার্কেলের ১১৭তম রাজা উ চ প্রু রাজ পোষাক পরিধান করে তরবারী হাতে অংশ নেন, এসময় রাজকর্মচারী, পাইক পেয়াদা, বিভিন্ন মৌজার হেডম্যান-কারবারী, দুরদুরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রজাসাধারণ ছাড়াও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা রাজার সাথে শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহন করে।

পুরাতন রাজ বাড়ী সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি, সেনা বাহিনীর চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার জিওসি মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল যুবায়ের ছালেহীন পিএসসি, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, বান্দরবান জেলা দায়রা জজ লা মং, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়সহ এবং দেশ-বিদেশ থেকে আগত বিভিন্ন অতিথিরা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে যোগ দেন জেলার ১০৯ টি মৌজার হেডম্যান এবং কারবারীরা। প্রতি বছর এই মেলার মাধ্যমে জেলার হেডম্যান এবং কারবারীরা আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজাকে খাজনা প্রদান করে থাকেন।

এ উপলক্ষে স্থানীয় রাজার মাঠে তিনদিন ব্যাপী চলবে রাজ পূণ্যাহ মেলা। এতে দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে সার্কাস, পুতুল নাচ, যাত্রাপালা, নাগরদোলা, হাউজি, স্থানীয় বিভিন্ন পন্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের ষ্টল। ঐতিহ্যবাহী এ উৎসব দেখতে হাজারো পর্যটকের ভীড় এখন বান্দরবানে।