ইসলামের প্রতিটি হুকুমই মানুষের জীবনে উপকার বয়ে আনে। অনেক সময় কল্যাণকর অনেক কাজ আমরা অবহেলায় করে গুরুত্ব দেই না। কিংবা জ্ঞানের স্বল্পতাবশত অনেকেই সুন্নাতের অনুসরণ থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখে।

দেড়হাজার বছর আগে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে বলেছেন। ফিকহের পরিভাষায় দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করাকে মাকরূহে তাহরিমি বলে অভিহিত করা হয়েছে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তোমাদের মাঝে যারা বলে যে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন, তাদের কথা বিশ্বাস করো না। কেননা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসেই প্রস্রাব করতেন।’ (তিরমিজি)

হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে, প্রস্রাবের কারণে মানুষের কবরে আজাব হয়। তাই প্রিয়নবি প্রস্রাবের অপবিত্রতা থেকে নিজেদেরকে হেফাজতের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।

দাাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার ব্যাপারে প্রিয়নবির সে নিষেধাজ্ঞাকে বর্তমান সময়ে চিকিৎসা বিজ্ঞান বিশেষভাবে সমর্থন করছে। শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষনায় দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার অনেক ক্ষতিকর দিকও বেরিয়ে এসেছে-

> দাঁড়িয়ে প্রস্রাবের ফলে মূত্রথলির নিচে জমে থাকা দূষিত পদার্থগুলি শরীর থেকে বের হতে পারে না। বসে প্রস্রাব করলে মূত্রথলিতে চাপ লাগে, ফলে সহজেই ওসব দূষিত পদার্থ প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

> দীর্ঘদিন দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করলে প্রস্রাবের বেগ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ফলে তা ধরে রাখার ক্ষমতাও লোপ পায়।

> দাঁড়িয়ে প্রস্রাবের ফলে পেটের উপরের অংশে চাপ পড়ে না। ফলে পেটের দূষিত বায়ু বের হতে পারে না। উল্টে তা শরীরের উপর দিকে উঠে যায়। যে কারণে শরীরের অস্থিরতা, রক্তচাপ, হৃদস্পন্দনের মাত্রা বেড়ে যায়।

> দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করার ফলে দুষিত পদার্থগুলো মুত্রথলিতে জমতে থাকে; দীর্ঘদিন জমতে থাকা দুষিত পদার্থগুলো এক সময় কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করে।

গবেষণায় দেখা যায়
যারা নিয়মিত দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করে শেষ জীবনে তারা কিডনির বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। জন্ডিস ও ডায়াবেসিটস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

সুতরাং দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা থেকে বিরত থেকে সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণ করে সুস্থ্য ও সুন্দর জীবন-যাপন করার জরুরি।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে দাঁড়িযে প্রস্রাব করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। সুন্নাতি গড়ে দুনিয়ার শান্তি ও পরকালের মুক্তির তাওফিক দান করুন। আমিন।