বাইজিদ আল-হাসান , ওমান থেকে:

মরুময় দেশ ওমানে প্রবাসী বাংলাদেশি সফলদের কাতারে যুক্ত হলেন আরেক যুবক মো. নবী হোসেন। ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে ১৯৯৮ সালে দেশটিতে এসেছিলেন এ স্বপ্নবাজ। দীর্ঘ ২০ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সততায় এখন তিনি সফল ব্যবসায়ী হিসেবে বেশ পরিচিত।

তার এই সফলতার পেছনে লুকিয়ে আছে জানা-অজানা অনেক গল্প। একজন সাধারণ টেকনিশিয়ান হিসেবে যাত্রা। তিনি শুরুতেই একটি অটো গ্যারেজে চাকরি করতেন। ৫ বছর চাকরি করার পর নিজের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে নেমে পড়েন ব্যবসায়।

২০০৩ সালে মাস্কাট এয়ারপোর্টের পাশে মাওয়ালা সিব নামক স্থানে ছোট্ট একটি অটো মোবাইল পার্টসের দোকান দেন। দীর্ঘদিন সেখানে ব্যবসা করার পর বেশ পরিচিতি লাভ করেন। এরপর দু’বছর পর আল মুহসেনা নামক শহরে নতুন আরেকটি কার ওয়াসের ব্যবসা শুরু করেন।

oman

পরে মাস্কাটে আরো একটি অটো টায়ারের দোকান দেন। পরিশেষে তিনি কাগজের ব্যবসায় নামেন। কাগজই তার ভাগ্য খুলেছে বলে জানান। এছাড়া মাস্কাট থেকে ২০০ কি.মি. দূরে খাবুরা নামক স্থানে একটি প্লাস্টিক ও কাগজের স্ক্রাস ফ্যাক্টরি রয়েছে। মূলত সেই ফ্যাক্টরি থেকেই দেশটির বিভিন্ন স্থানে কাগজ রফতানি করে থাকে।

আলাপে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ৫ টন কাগজ ও ১ টন প্লাস্টিক স্ক্রাস করে দুবাইসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাপ্লাই দেন। ২০০৩ সালে ব্যবসা আরম্ভ করার পর থেকে এখন পর্যন্ত তাকে পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তিনি ওমানে ৬টা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন।
এছাড়াও চট্টগ্রামে ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন রয়েছে তার।

oman

ব্যবসা-বাণিজ্য সফলভাবে পরিচালনা করলেও কিছু বিষয়ে তাকে বেশ পীড়া দিয়েছে। তিনি জানান, ‘ওমানে প্রায় ৮ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব সেক্টরেই বাংলাদেশিদের অবস্থান প্রশংসনীয়। কিছু অসাধু বাংলাদেশির জন্য সব প্রবাসীদেরই বিভিন্ন সময়ে অপমান অপদস্থের মুখোমুখি হতে হয়।’

তিনি আরও জানান, ‘এ মাসের ৭ তারিখ বাংলাদেশ থেকে ওমান আসার সময় ২৭ কেজি ইলিশসহ বেশকিছু রূপচাঁদা ও চিংড়ি মাছ এনেছিলেন পরিবারের জন্য। কষ্টের বিষয় হলো, এসব মাছগুলোকে ওমান এয়ারপোর্টেই ফেলে দিয়ে আসতে হয়েছে। কোনোভাবে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ মাছগুলো আমাকে ফেরত দেয়নি।

oman

কেন ফেলে দিতে হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত কর্তৃপক্ষ মনে করেছে মাছের ভেতর মাদক রয়েছে। কারণ মাদক বিক্রেতারা বিভিন্ন কৌশলে মাদক নিয়ে আসে। ওরা ভেবেছিল মাছের ভেতর মাদক রয়েছে। তাই সন্দেহ করে মাছগুলো ফেলে দেয়। এর জন্য তো আমরাই দায়ী। আমাদের কারণেই আজ এই অবস্থা। দেশটিতে এর আগে এ ধরনের সমস্যা ছিল না।’

‘মাছের ভেতর করে এসব ব্যবসায়ীরা গাঁজা, ইয়াবা ইত্যাদি নিয়ে আসে। এর আগে বিভিন্ন সময় এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ ব্যাপকহারে নেশা জাতীয় দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করেছে। এসব কারণেই দেশটিতে প্রশাসন থেকে খুব কড়াকড়ি করছে।’