সাইফুল ইসলাম:
নিষেধ থাকা সত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আবু সামা সওদাগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে পাঠদানের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও কোমলমতি ছোট্ট শিক্ষার্থীরা। এ ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলটি কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের বড় চৌধুরী পাড়ায়। জানা গেছে, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ স্কুলে পাঠদান চালানো হচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও তারা বলেন, ঐ স্কুলে নতুন ভবন না হওয়া পর্যন্ত আপাততে পাঠদান অন্যত্রে অথবা স্কুলের পাশের্^ আলাদা ভবন নিমার্ণ করে পড়ান। অন্যত্রে বা আলাদা ভবন নিমার্ণ করার সামর্থ স্কুল পরিচালানা কমিটি ও এলাকাবসীর নেই বলে জানা গেছে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তার কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানালেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এ বিদ্য প্রতিািলয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৮৫ সালে। এ জরাজীর্ণ ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা পাঠদান গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। বিদ্যালয়ের চার রুমের ভবনের একটিতে অফিস কক্ষ আর তিনটিতে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হয়। বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোনরকমে সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি শিক্ষকও সংকট রয়েছে। এ বিদ্যালয়ে সরকারীভাবে তেমন কোন অনুদান পাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের চতুর্থপাশে কোন ধরণের ওয়াল নেয়। সব দিকে দিয়ে এ বিদ্যালয়টির অবস্থা বর্তমানে নাজুক অবস্থায় পরিনত হয়েছে। নেই বিদ্যালয়ের চতুর্থাপাশে কোন গাছ-গাছালী, নেই বিদ্যালয়ের কোন পরিবেশ। সরকারের কাছে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা দ্রুত ভবন নিমার্ণ ও অন্যত্রে পড়ানোর ব্যবস্থা করার জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
২৩ সেপ্টেম্বর (রোববার) ঝুঁকিপূর্ণ এ স্কুলটিতে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের ছাদ, ভিম ও দেয়াল থেকে খসে পড়েছে পলেস্তারা। বেরিয়ে এসেছে ছাদ ও ভিমে মরীচিকা ধরা রড ও মাঝখানে বড় বড় ফাটল। সামান্য বৃষ্টিতেই ভবনের ছাদ থেকে চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ে শ্রেণীকক্ষে। সম্প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাদের কংক্রিট খসে পড়ে কয়েক শিশু শিক্ষার্থী আহত হয় বলে জানান স্থানীয়রা। এরপরেও জীবনের নিরাপত্তার দিকে না চেয়ে বাধ্যহয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান স্কুলের শিক্ষকেরা। স্কুলভবনের ছাদ ধসে পড়ে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে ছাত্রছাত্রীসহ অভিভাবক মহল।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছুরত আলম বলেন, বিদ্যালয়ে মোট ৩০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থী ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করতে এসে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছে না। তাদের মনে সবসময় এক ধরনের ভয়-আশঙ্কা বিরাজ করে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ এ স্কুলে পাঠদান করাতে হচ্ছে। আমরাও ক্লাসে সব সয়য় আতঙ্কে নিয়ে লেখাপড়া করাচ্ছি। কোন সময়ে ধ্বসে পড়ে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। ক্লাস করার সময়ে আমাদেরকে একবার ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে থাকালে আরেকবার ভয়ে ছাদের দিকে থাকায়। করার কিছু নেই। একই অবস্থা ছাত্র-ছাত্রীদেরও। নিষেধ থাকলেও করার কিছু নেই। অন্যত্রে ভবন নিমার্ণ করে পড়ানোর সামর্থ আমাদের নেই।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়–য়া জানান, এ বিদ্যালয়ের বিষয়ে আমি অবগত নয়। খবর নিয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।