শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি:
গত ৭ জুলাই রাত ১০ টার দিকে রামু উপজেলার ঈদগড়-বাইশারী সড়কে মোটর সাইকেল চালকসহ অপহৃত সাদ্দাম হোসেন (১৮) ও নুুুরুল আমিন (২৪) এখনো উদ্ধার হয়নি।

অপহরনের পর থেকে নাইক্ষ্যংছড়িস্থ ৩১ বিজিবির সদস্যরা অধিনায়কের নির্দেশে ঈদগড়ের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গহীন বনে সম্ভ্যাব্য এলাকায় সাড়াশী অভিযান চালায়। পাশাপাশি কক্সবাজারের রামু থানা পুলিশ, ঈদগড় পুলিশ, বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ গহীন বনে অভিযান পরিচালনা করেন। তবে এ পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয় নাই।

সরজমিনে এই প্রতিবেদক অপহৃত যুবকদ্বয়ের বাড়ীতে গিয়ে পিতা-মাতার সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা পুত্রের শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরিবারের সকল সদস্যদের মাঝে কান্নার রুল পড়ে যায়।
অপহৃত যুবক সাদ্দাম হোসেনের পিতা উসমান গনী জানান, গত ৭জুলাই অপহরনের তিন দিন পর ৯ জুলাই রবিবার অপরিচিত এক মোবাইল নাম্বার থেকে অপহৃতদের মুক্তিপনের জন্য ৬ লাখ টাকা দাবী করছিল।

গত ৭ জুলাই ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক নুরুল আমিন দুই আরোহী সাদ্দাম হোসেন ও জসিম উদ্দিনকে নিয়ে ঈদগড় বাজার থেকে নিজ বাড়ী বাইশারী আসার পথে রাত ১০ টায় বাইশারী-ঈদগড় সড়কের অলিরঝিরি নামক স্থানে ৭/৮ জনের সশস্ত্র ডাকাত দলের সদস্যরা সড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেট সৃষ্টি ও গুলি বর্ষন করে দুইজনকে অপহরন করে নিয়ে যায়। ঐ সময় জসিম উদ্দিন নামের আরোহী পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পায়। এরপর পরই ঘটনাটি প্রশাসনকে জানানো হলে ঈদগড় পুলিশ-বাইশারী পুলিশ ও এলাকাবাসী উক্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
অপহৃত সাদ্দাম হোসেনের বড় ভাই ফোরকান আহমদ জানান, গত ৮ জুলাই অপহরনের বিষয় নিয়ে রামু থানায় একটি সাধারন ডাইরী করেছেন।
তিনি আরো জানান, অপহরণকারীরা এখন বিভিন্ন অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপনের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে। তাদের চাহিদা মত মুক্তিপন না দিলে মেরে ফেলারও হুমকি প্রদান করছে সন্ত্রাসীরা। এ নিয়ে পরিবারে সদস্যরা চরম উদ্দেগ উৎকন্ঠায় দিনযাপন করছে।
এ বিষয়ে রামু থানার (ওসি তদন্ত) পরিদর্শক কবির হোসেনের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপহরনের পর থেকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে সন্ত্রাসীদের সম্ভাব্য স্থানে অপহৃতদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি বিজিবির টহল ও সাড়াশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, অপহৃতদের উদ্ধারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বাইশারী-ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কে অপহরন, মুক্তিপন, বানিজ্য নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হলে অবশ্যই সন্ত্রাসীরা ধরা পড়বেন বলে মনে করেন তারা। এজন্য র‌্যাবের অভিযান জরুরী হয়ে পড়েছে।

অপহৃতদের পরিচয়:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের দক্ষিন বাইশারী গ্রামের বাসিন্দা উসমান গনীর পুত্র মাদ্রাসা পড়ুয়া সাদ্দাম হোসেন ও একই ইউনিয়নের পূর্ণবাসন পাড়া গ্রামের বাসিন্দা করিম মুন্সির পুত্র মোটর সাইকেল চালক নুরুল আমিন।