ধর্ম ডেস্ক:
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ঘোষণা করেছেন, ‘আমি মানুষ এবং জিন শুধুমাত্র আমার ইবাদত ব্যতিত অন্য কোনো কাজে সৃষ্টি করিনি।’ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজই ইবাদত। যদি তা হয় কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক।

রমজান মাসে দিনের বেলায সাওম বা রোজা পালন এবং রাতের বেলা দীর্ঘ কেরাতে নামাজ আদায় হলো উত্তম ইবাদত। এ মাসের প্রধান ইবাদত হলো সাওম বা রোজা পালন করা।

শারীরিক ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে রোজা সাওম পালন করা অত্যন্ত কষ্টকর। এটা ইসলামের চতুর্থ স্তম্ভ। রোজা অধিক কষ্টের ইবাদত হওয়ার কারণেই এ মাসে মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে বসন্তের আবহ বিরাজ করে।

আল্লাহ তাআলার বান্দারা পবিত্র রমজান মাস জুড়ে দিনের বেলা সাওম বা রোজা পালন করে আর তারাবিহ, কুরআন তেলাওয়াতসহ নফল ইবাদত-বন্দেগিতে রাত অতিবাহিত করে।

মুসলিম উম্মাহ যাতে নির্বিঘ্নে জান্নাতি আবহে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত হয়ে এ মাসের ইবাদত পালন করতে পারে সে জন্য আল্লাহ তাআলা এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেন, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেন আর শয়তানকে কুমন্ত্রণাদানে বিরত রাখতে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখেন। এটা রোজাদারের জন্য এক মহাপুরস্কার।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসের ব্যাপারে কসম করে বলেছেন যে, রমজান মাস ইবাদত-বন্দেগির জন্য সর্বোত্তম মাস। হাদিসে এসেছে-

হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলার কসম! মুসলমানদের জন্য রমজানের চেয়ে উত্তম কোনো মাস আসেনি এবং মুনাফিকদের জন্য রমজান মাসের চেয়ে অধিক ক্ষতির মাসও আর আসেনি।

কেননা মুমিনগণ এ মাসে (গোটা বছরের জন্য) ইবাদতের শক্তি ও পাথেয় সংগ্রহ করে। আর মুনাফিকরা তাতে মানুষের উদাসীনতা ও দোষত্রুটি অন্বেষণ করে।

এ মাস মুমিনের জন্য গনীমত আর মুনাফিকের জন্য ক্ষতির কারণ। (মুসনাদে আহমদ, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ইবনে খুযাইমা, তাবারানি, বাইহাকি)

হাদিসের আলোকে রমজান মুমিনের জন্য ইবাদতের শ্রেষ্ঠ মাস আর মুনাফিকের জন্য শ্রেষ্ঠ ক্ষতির মাস। তাই মানুষের উচিত এ মাসের মুনাফেকি ত্যাগ করে ইবাদত বন্দেগিতে আত্মনিয়োগ করা।

তাছাড়া আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ (রমজান) মাস পাবে; সে যেন রোজা পালন করে।’ হাদিসে কুদসিতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কারণ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘রোজা আমার জন্য রাখা হয়; আর আমি এর প্রতিদান দেব।’

পরিশেষে…
যেহেতু কুরআন নাজিলের মাস রমজান হলো ইবাদত বন্দেগির জন্য সর্বোত্তম মাস। আর আল্লাহ তাআলা সাওম বা রোজাকে এতই পছন্দ করেন যে, তিনি যুগে যুগে সব নবি-রাসুলের ওপর রোজাকে ফরজ করে দিয়েছিলেন।

শুধু তাই নয়, প্রত্যেক নবি রাসুলের ওপর হেদায়েত গ্রন্থ ও সহিফাসমূহ এ রমজান মাসেই নাজিল করেছেন। তাই আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন এবং হেদায়েত লাভে রমজান মাসের বিকল্প নেই।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইবাদতের বসন্তকাল পবিত্র মাস রমজানে সাওম বা রোজা পালন, রাতের নামাজ তারাবিহ ও কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে রহমত মাগফেরাত ও নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।