রকমারী ডেস্ক
আমরা প্রত্যেকেই প্রাত্যাহিক জীবনে মানসিক চাপে থাকি। আপনার কিছু ছোট ও সাধারণ পরিবর্তন মানসিক চাপ অনেক কমিয়ে দিতে পারে।
এই ৭ উপায় খুব দ্রুত আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে এবং খুব সহজে আপনি মানিয়েও নিতে পারবেন।
১. আগে আগে ঘুমাতে যেতে হবে ও উঠতে হবে
ঘুম আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি আগে আগে ঘুমাতে যান এবং তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠেন তাহলে আপনার দিনটি খুব সুন্দর কাটবে। আপনার সকাল যদি বিশৃঙ্খল হয় তবে বাকি দিন আপনার একইভাবে কাটবে। তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে যদি আপনি উঠেন তাহলে ধীরে সুস্থে সব কাজ করতে পারবেন এবং নিজেকে তৈরি করতে পারবেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও নিজেকে সময় দিতে পারবেন। আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের পছন্দের কাজ করতে পারেন। যেমন- বই পড়া, ধ্যান করা বা যা আপনার পছন্দ।
২. তালিকা তৈরি করুন
সকালে ঘুম থেকে উঠে সারা দিন কী করবেন সে তালিকা তৈরি করুন। এই কাজের কারণে আপনি সারাদিনের কাজ গুছিয়ে করতে পারবেন এবং নিজের কাছে পরিষ্কার থাকতে পারবেন যে আপনাকে আসলে কী করতে হবে। যে কাজগুলো করা হয়ে যাবে সে কাজের পাশে ক্রসচিহ্ন দিতে পারেন। যদি আপনার কাজের তালিকা অনেক বড় হয়ে যায় তবে শুধু গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করুন। এর ফলে আপনি বুঝতে পারবেন আজকের দিনে আসলে কোন কাজটি করা যায় এবং পরের দিনের জন্য কোন কাজ রেখে দেওয়া যায়।
৩. যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না তা নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই
দুশ্চিন্তা আপনার সময় ও শক্তি দুটিই নষ্ট করে। যে বিষয় আপনি নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না সেটি নিয়ে চিন্তা করে সময় নষ্ট করবেন না। আপনি দুশ্চিন্তা করলে তা পরিবর্তন হবে না। যদি পরিস্থিতি আপনার হাতে থাকে তবে অবশ্যেই সমাধান নিয়ে চিন্তা করবেন, সমস্যা নিয়ে নয়। যদি আপনি শুধু সমস্যা নিয়েই ভাবেন তাহলে এটা শুধু বাড়বে এবং আরো বেশি জটিল হতে থাকবে। কিন্তু আপনি যদি সমধান নিয়ে ভাবেন তাহলে তা সহজ হয়ে যাবে এবং জটিলতা কমতে থাকবে।
৪. ‘না’ বলতে শিখুন
মানসিক চাপ কমানোর সবচেয়ে শক্তিশালী উপায় হলো না বলতে পারা। আপনি যা সত্যিকারভাবে করতে চান না তখন অবশ্যই না বলবেন। যদি কিছু ক্ষেত্রে আপনার মনে হয় আপনাতে কাজটি করতেই হবে অথবা আপনার কাছে মনে হচ্ছে না করলে বিষয়টি খারাপ হবে তবে সেক্ষেত্রে আপনি চিন্তা করুন কী করবেন। নিজের ওপর চাপ নিলে তা অপ্রয়োজনীয় মানসিক চাপ তৈরি করে। কারো অনুরোধের কাজ করতে করতে এক সময় দেখবেন নিজের প্রয়োজনীয় কাজও আপনি করতে পারছেন না। তাই শক্তভাবে না বলতে শিখুন।
৫. অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় ব্যয় করা যাবে না
একটু সময় নিন। চিন্তা করুন গত সপ্তাহে আপনি কী করেছিলেন? এমন কি কোনো কাজ করেছিলেন যা অপ্রয়োজনীয় ছিল এবং আপনি তা খুব সহজে এড়িয়ে চলতে পারবেন? ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে স্ক্রল করে দিনের অনেক সময় কেটে যায়? কিছু সময় নিয়ে আপনি চিন্তা করুন এমন কোন কাজ আছে যা আপনাকে সামনে আগাতে বাধা দিচ্ছে। কোন ধরনের কাজ করলে আপনি সামনে আগাতে পারবেন। যদি আপনি একবার আপনার এ অভ্যাস চিহ্নিত করতে পারেন তাহলে আপনি নিজের মধ্যে আরো বেশি পরিবর্তন আনতে পারবেন। যেমন-আপনি যদি সপ্তাহে ৫ ঘণ্টা ফেসবুকে সময় না কাটিয়ে এ সময় নতুন শখের কাজ করেত পারেন।
৬. স্বাস্থ্যকর খাবার খান
পুষ্টিকর খাবার না খেলে আপনার শরীরের পক্ষে মানসিক চাপ মানিয়ে নেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে আপনি সারাদিন কাজের শক্তি পাবেন। এক্ষেত্রে আপনার প্রতিদিনের খাবারে প্রচুর সবজি, ফল, আমিষ, উপকারী চর্বিজাতীয় ও শস্যজাতীয় খাবার রাখুন। চেষ্টা করুন ফাস্টফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলতে। এগুলোতে বেশি কৃত্রিম প্রিজারভেটিভ, রং ও গন্ধ থাকে। সারাদিন পানি খাবেন। এতে আপনার শরীরের শক্তি আরো বাড়বে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে এবং মানসিক চাপের সঙ্গে যুদ্ধও করতে পারবেন।
৭. কৃতজ্ঞ হতে শিখুন
নিজের জীবনের পাওয়া সকল সুযোগ ও অভিজ্ঞতার জন্য কৃতজ্ঞ হতে শিখুন। দিন শেষে অবশ্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন, আজকের দিনে আমি সবচেয়ে সেরা কী পেয়েছি? প্রতিদিন নিজেকে এ প্রশ্ন করুন। একইসঙ্গে এতে আপনার পরিবার, বন্ধু ও সঙ্গীকেও জিজ্ঞাসা করুন।
খুব সহজে আপনি এ ৭ উপায়ে নিজের জীবনকে চাপমুক্ত করে গড়ে তুলতে পারবেন। সূত্র : হাফিংটন পোস্ট।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।