বান্দরবান প্রতিনিধি :

বর্ষবরণ বিজুতে ঘিলা খেলায় মেতেছে বান্দরবানের চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যারা। বুধবার সন্ধা থেকে শুরু হয়েছে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ বিজু উৎসব। সকালে নদী ও খালে ফুল ভাসিয়ে বিজু উৎসবের সূচনা করে চাকমারা। অন্যদিকে পাড়ায় পাড়ায় আয়োজন করা হয়েছে তঞ্চঙ্গ্যাদের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা। ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে দল বেধে নারী-পুরুষ এই খেলায় মেতে উঠে।

বান্দরবানে এবার সবচেয়ে বড় আয়োজন শহরের বালাঘাটা এলাকায়। ঘিলা খেলা গোল্ডকাপ টুনামেন্ট উদ্ধোধন করেন পাবত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি,এসময় ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হারুনর রশিদ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনিবান চাকমা,পৌর মেয়র ইসলাম বেবী,জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষী পদ দাশ,সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, সভাপতিত্ব করেন বাংলাদশে তঞ্চঙ্গ্যা কল্যান সমিতির সভাপতি প্রসন্ন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা ঘিলা খেলা রাতব্যাপী । বান্দরবান সাত উপজেলার বিভিন্ন পাড়ায়ও ঘিলা খেলার আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বয়স্ক পূজা ও মূল বিজু উৎসব। চাকমারা বর্ষবরণকে বিজু বললেও তঞ্চঙ্গ্যারা বলে বিষু। এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণই হল ঘিলা খেলা। এটি শত বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি খেলা। তঞ্চঙ্গ্যাদের বিশ্বাস ঘিলা পবিত্র একটি ফল। এটি পাহাড়ে জন্মানো একটি লতা গাছের ফল। এটি দেখতে অনেকটা সবজি সিমের মত। তবে আকারে অনেক বড় হয়ে থাকে। এক একটি ফলের ফলের ভেতর থাকে কয়েকটি শক্ত ঘিলা। এই ঘিলা ঘরের দরজায় ঝুলিয়ে রাখা হয় অপদেবতা থেকে মুক্ত থাকতে। বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে তঞ্চঙ্গ্যারা নতুন বছরে পূণ্য লাভের আশায় ঘিলা খেলা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। নতুন বছরে উৎসবের আগে পাড়ায় পাড়ায় চলে ঘিলা খেলার চর্চা। পুরস্কার জেতার আশায় দল বেধে চলে নানা প্রস্তুতি। পাহাড়ি নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পোশাক পরিচ্ছদ ও অলঙ্কার পরিধান করে তঞ্চঙ্গ্যা নারীরা। বেশিরভাগই রূপা দিয়ে তৈরি করা হয় এসব অলঙ্কার। এসব পরিধান করে নারীরা ঘিলা খেলায় অংশগ্রহণ করে।

এদিকে, বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের নেতা কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা জানান, আগে বর্ষবরণ বিষুতে পাড়ায় পাড়ায় এই ঘিলা খেলার আয়োজন করা হত। এখন পাহাড়ে ঘিলা গাছ তেমন একটা দেখা যায়না। তাছাড়া চর্চার অভাবে ঘিলা খেলা এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।