মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু, সীমান্ত থেকে ফিরে,

বাংলাদেশ-মিয়ানমার নাইক্ষ‍্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে সে দেশের অভ্যন্তরে ৮টি পয়েন্ট দিয়ে এক যুগে একই সময়ে শুরু হয় তুমুল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। সীমান্তের একাধিক লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় দুপুর একটার দিকে চাকঢালা আমতলী মাঠের সীমানা পিলার থেকে ৪৩,৪৪,৪৫,৪৬,৪৭,৪৮,৪৯,৫০ ফুলতলী পযর্ন্ত,একটু আগে পরে হয়ে ব্যাপক গোলাগুলি সাথে আর্টিলারি মটর সেলের বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আমতলী মাঠ থেকে দৌছড়ির বাহির মাঠ সীমান্ত জুড়ে।

মিয়ানমারের সামান্য ভিতর থেকে আসা এই ভারী বিস্ফোরণের আওয়াজ স্থায়ী হয় দুপুর একটা থেকে বিকেল ৪টা পযর্ন্ত চলে।
সীমান্তের লোকজন জানান মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং আরাকান আর্মির মাঝে নিজেদের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের কারণ।

জামছড়ি বাসিন্দা মোঃ রহমান জানান অনেক দিন আরাকান আর্মি মিয়ানমারের সীমান্তে ছিলনা,তারা মিয়ানমারের অনেক ভিতরে চলে গিয়েছিল কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে আবারো ফিরে এসেছে মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি।

সীমান্তের আরেক বাসিন্দা বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার অনেক গুলো অবজারভেশন পোস্ট হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। সেই হারানো অবজারভেশন পোস্টগুলো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বতর্মানে আরাকান আর্মির, সেগুলো পূর্ণ উদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা,আর সে কারণে চলমান এই বিস্ফোরণের আওয়াজ হয়তো কমবে না বরঞ্চ বাড়বে।

নাইক্ষ‍্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, অবস্থা ভয়াবহ জামছড়ি এলাকায় তিনি আছেন, ঐ এলাকাতে অবস্থান করছেন,মিয়ানমারের অভ‍্যন্তর থেকে কম হলেও বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ১৫ রাউন্ড গুলি এসে পড়েছে। সন্ধ‍্যা ৬টা ৩০মিনিট পযর্ন্ত,সীমান্ত পরিস্থিতি চরম ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে জামছড়ি এলাকার সীমান্ত ঘেঁষা ৩০ পরিবারকে সরিয়ে আনা হয়েছে নিরাপদ স্থানে। বর্তমানে এসব পরিবারগুলো স্থানীয় একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি আরো জানান ওই পরিবার গুলোকে সরিয়ে আনতে গিয়ে তার খুব কাছে এসে পড়ে একটি গোলা। অল্পের জন্যে তিনি এবং সাথে থাকা নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম কাজল এর গায়ে পড়েনি। অল্পের জন্যে রক্ষা পান চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক।
জামছড়ি ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ছাবেরের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,তার জীবনে এই প্রথম এমন গুলি এবং আর্টিলারি মটার বিস্ফোরণের টানা আওয়াজ শুনে তিনি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রেজাউল করিম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) সালমা ফেরদৌস সীমান্ত থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনার কথা স্বীকার করেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় সীমান্তের প্রায় দুই শত পরিবার নিরাপদ স্থানে চলে এসেছে। বর্তমানে ওই সব সীমান্ত জনপদের মানুষের মাঝে নতুন করে আতষ্ক দেখা দিয়েছে। তবে সীমান্তে অবস্থানরত সচেতন ব্যক্তিরা জানান, সে সব সীমান্তে বিজিবি বিওপির জোয়ানরা আছেন তারা সতর্ক অবস্থানে আছে। সীমান্তে কোন মানুষকে না যেতে নিষেধ করেছেন।