অনলাইনর ডেস্ক: গত কয়েকদিন ধরেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল ভারতের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ধস নামতে পারে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে কয়লার মজুদ আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। কোনো কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রে মাত্র একদিনের কয়লা মজুদ আছে। কয়লা সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও তা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। আজকালের মধ্যে কয়লার ব্যবস্থা করা না গেলে পুরোপুরি ব্ল্যাকআউটের কবলে পড়ে যেতে পারে দিল্লিসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকা।

দিল্লির বিদ্যুৎমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন শনিবার বলেন, দিল্লির তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে হাতে মাত্র একদিনের কয়লা মজুদ রয়েছে। পরিস্থিতির সামাল দিতে না পারলে দু’দিন পরই আধাঁরে ডুবে যাবে রাজধানী। সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, এমনটি হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে। দুর্গাপুজোর শুরুতেই অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে পুরো দিল্লি।

সংবাদসংস্থা এএনআইও নিশ্চিত করেছে, দিল্লি যেসব তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পায়, সেখানে মাত্র একদিনের কয়লা মজুদ আছে। কেন্দ্র পরিচালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উপর নির্ভর করে দিল্লি। যেখান থেকে চাহিদার ভিত্তিতে দিল্লিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দিল্লির বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, যদি আমরা কেন্দ্র থেকে বিদ্যুতের জোগান না পাই, দু’দিন পরেই পুরো দিল্লি ব্ল্যাকআউটের কবলে পড়বে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে শনিবার টুইটারে জানান, সংকট এড়াতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

জানা যায়, পুরো ভারতেই একই অবস্থা বিরাজ করছে। ভারতে যে পরিমাণ কয়লা উৎপাদিত হয় তার সিংহভাগই সরবরাহ করা হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিটগুলিতে। দেশটির বিদ্যুতের মোট চাহিদার ৫৩ শতাংশই আসে এ কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে।

করোনার কারণে বন্ধ রাখার পর ভারতে বিভিন্ন শিল্পকারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা বেশ বেড়েছে। অন্যদিকে, কয়লার উৎপাদনে দেখা দিয়েছে ঘাটতি। দেশটির বিভিন্ন স্থানে অতিবর্ষণের কারণে কয়লার উৎপাদন কমে এসেছে। কয়লা আমদানির ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে বিপত্তি। অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কয়লার দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে কয়লা সরবরাহে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে।