আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মহামারির মধ্যেও চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বাণিজ্য যুদ্ধ ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে তার প্রমাণ কিছুদিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছিল। বিশেষত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথার সূত্রে। সেই শঙ্কা এবার আরও জোরালো হলো। চীনের ৩৩টি কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

উত্তরপশ্চিম চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে সংখ্যালঘু মুসলিম ধর্মাবলম্বী উইঘুরদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি, সরকারের বিধ্বংসী অস্ত্র উৎপাদনে সহায়তা ছাড়াও চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে দেশটির এসব কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এসব চীনা কোম্পানিকে ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ করার এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ফলে নানা অভিযোগে চীনা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে নিষিদ্ধ করার ট্রাম্প প্রশাসনের চেষ্টায় নতুন মাত্রা পেল।

অনেকে বলছেন, জিনজিয়াংয়ে পুনঃশিক্ষণ কার্যক্রমের নামে বেইজিং কর্তৃপক্ষ সংখ্যালঘু উইঘুরদের ওপর যে নির্যাতন এতদিন চালিয়ে যাওয়ার কারণে মার্কিন কর্তৃপক্ষ যেসব পদক্ষেপ এতদিন নিয়েছে এই কালো তালিকাভুক্তি তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

তবে শুধু উইঘুর কিংবা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক নয়, এছাড়াও এই তালিকাভূক্তির নেপথ্যে বেশ কিছু কারণ দেখছেন রাজনৈতিক ভাষ্যকারেরা। তাদের দাবি, চীনের আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বিক্ষোভ দমনে বেইজিংয়ের প্রস্তাবিত নিরাপত্তা আইন ও তাইওয়ান নিয়ে চীনের সাম্প্রতিক অবস্থানও এর বড় কারণ।

খসড়া ওই আইন দেশটির কমিউনিস্ট সরকারের কনভেনশনে উত্থাপতি হবে এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পরপরই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা পুনর্বিবেচনার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানান। আর তার পরপরই ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা আসলো।

সাতটি কোম্পানি ও দুটি ইনস্টিটিউটিকে তালিকায় রাখা হয়েছে উইঘুরদের ওপর চীন সরকারের চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিগ্রহ, নির্যাতনে জড়িত থাকার অভিযোগে। সামরিক বাহিনীর জন্য সরঞ্জাম সংগ্রহ এবং উৎপাদনে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে বাকিগুলোকে।

ওয়াশিংটনের অর্থনৈতিক কালো তালিকাভুক্তির খড়গে পড়া চীনা এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট ইনটেল ও এনভিডিয়ার সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতায় থাকা চীনা কোম্পানি নেটপোসা রয়েছে তালিকার শীর্ষে।