আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ করোনাভাইরাস মহামারির নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানায় জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চীনের উহানে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার প্রায় ছয় মাস পর প্রাদুর্ভাবের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে দক্ষিণ আমেরিকা। সংস্থাটির জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ড. মাইক রায়ান বলেছেন, আমরা দক্ষিণ আমেরিকার অনেকগুলো দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। অনেক দেশের মধ্যে এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাজিল। এক দিক থেকে এই রোগটির নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে দক্ষিণ আমেরিকা।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে এই মুহূর্তে সর্বাধিক করোনা আক্রান্ত ব্রাজিলে। রায়ান বলেন, দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে।

ব্রাজিলে করোনার চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ারোধী ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের অনুমোদনের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মাইক রায়ান। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, করোনাকে দূরে রাখতে তিনি এই ওষুধটি সেবন করছেন।

কিন্তু বেশ কিছু গবেষণায় করোনার চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শুক্রবার প্রকাশিত নতুন একটি গবেষণায় বলা হয়, করোনা রোগীদের মধ্যে যাদের হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন দেয়া হচ্ছে; অন্যদের চেয়ে তাদের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।

রায়ান বলেন, বর্তমান ক্লিনিক্যাল তথ্য-উপাত্ত কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ব্যাপক ব্যবহার সমর্থন করে না। পূর্ণাঙ্গ ট্রায়াল এবং পরিষ্কার ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা।

শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশবিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৮৯০ জন। যা বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ। দেশটিতে মারা গেছেন ২১ হাজার ১১৬ জন।

দক্ষিণ আমেরিকার আরেক দেশ পেরুতে সংক্রমিত হয়েছেন এক লাখ ১১ হাজার ৬৯৮ জন। চিলিতে ৬১ হাজার ৮৫৭ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। এছাড়াও এই মহাদেশের অন্যান্য দেশেও প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যু।

করোনায় এখন পর্যন্ত সর্বাধিক সংখ্যক আক্রান্ত এবং মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রে; দেশটিতে আক্রান্ত ১৬ লাখ ১ হাজার ৪৩৪ এবং প্রাণ হারিয়েছেন ৯৭ হাজার ৬৬৫ জন। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে রাশিয়ায়; ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮২২ জন এবং মারা গেছেন ৩৩৮৮ জন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে এই ভাইরাস ধরা পড়ার পর বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে। ৩ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৩ লাখ।