সাইফুল ইসলাম:
রাত ৩টা ১১মিনিট। শুনশান নিরবতা। এমন সময় ফোন দিলাম আমার বড় মেয়ে পুতুলের সবচেয়ে প্রিয় ডাঃ জনাব প্রণয় রুদ্রকে। যদিও এতরাতে ফোন দিয়ে জনাবের ঘুম ভেঙে দেয়ার মোটেই ইচ্ছে ছিলনা আমার। কারণ ডাক্তাররাও মানুষ। তাঁদেরও বিশ্রাম প্রয়োজন। তাঁরা যদি একটু বিশ্রাম না নেয় তাহলে এই দুঃসময়ে তাঁরা আমাদের যথাযথ সেবা কিভাবে দেবে? তারপরও মেয়ের অস্হিরতা দেখে ফোন দিতে বাধ্য হলাম। তবে তিঁনি যথারীতি ফোন ধরলেন। বললেন কী সমস্যা? আমি বললাম,ছোট মেয়ে মুক্তা বিছানায় চটপট করছে বিধায় মেয়েকে ১৫ ফোটা পেডিকন সিরাপ দিয়েছি। তিঁনি বললেন, সমস্যা নাই। ভালো করেছেন। এরপরও সমস্যা হলে ভিসেট সিরাপ ১৫ ফোটা দেবেন। যদিও মেয়েকে ভিসেট খাওয়াতে হয়নি। পেডিকন সিরাপ খাওয়ানোর কিছুক্ষণের মেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আমি কিন্তু প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্র ইতিমধ্যেই বাড়িতে এনে রেখেছি। করোনা মহামারী সংকটকালে সরকারি নির্দেশনা মানার পাশাপাশি নিজের ও পরিবারের অন্যান্যদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে হালকা খাবার ও ঔষধ বাড়িতে সংরক্ষণে করে রেখেছি।

আর ঘুম হলো না। তাহাজ্জুদ নামাজের পর ফজরের নামাজ পড়ে মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছি নিজের জন্য, নিজ পরিবারের জন্য, সমাজের অসহায় মানুষের, দেশের জন্য, মানবতাবাদী ডাক্তারদের জন্য ও দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের জন্য। বিশেষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ডাক্তারদের জন্য। তাঁরাই এই মুহূর্তে আমাদের সব।

মোনাজাত শেষ করে ঘুমাতে গেলাম। মেয়েও তখন গভীর ঘুমে মগ্ন। আমার চোখেও ঘুম চলে আসল। তবে ঘুমাবার আগে মানবতার ডাক্তার প্রণয় রুদ্রকে স্মরণ করলাম ও তাঁর জন্য,মন থেকে আবার দোয়া করলাম। ধন্যবাদ মানবতার ডাক্তার প্রণয় রুদ্র। গভীর রাতেও ফোন ধরে রোগীকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়ার জন্য।

 

লেখকঃ সাইফুল ইসলাম বিএ