অধ্যাপক রায়হান উদ্দিন

সবাই বলেন আমাদের প্রেরনা চাই। আমরা সবাই হতাশায় ভুগছি।আমি একটা উদাহরন দিই ।প্রেরনা দিয়ে কি হয়।প্রৃথিবীতে আজ পর্যন্ত ১৮ টি সভ্যতা এসেছে।তাদের মধ্যে বলা হয় সব চেয়ে বড় সভ্যতা হচ্ছে গ্রীক সভ্যতা।এথেন্সের কিছু মানুষের কাছেই গ্রীক সভ্যতা পুর্ণতা পেয়েছিল এই এথেন্সের জনসংখ্যা ছিল সাড়ে চার লক্ষ।তার মধ্যে আড়াই লক্ষ ছিল ক্রিতদাস। তাদের না ছিল কোন ভোটাধীকার , না ছিল কোন কথা।তাহলে থাকলো কত দুই লক্ষ । দুই লক্ষের মধ্যে অনেক নারী।গ্রীকরা বিশ্বাস করতো যে নারীদের কোন আত্মা নেই। তাদের কোন কথা কথাই নয়।তাহলে থাকলো এক লক্ষ শিশু ।তাদের মধ্যে বেশ কিছু বাদ দেওয়া হলে থাকে মাত্র পঞ্চাশ হাজার।এই পঞ্চাশ হাজার লোক পৃথিবীর শ্রেষ্ট সভ্যতাকে ধরে রেখেছিল।কি দিয়ে! প্ররণা দিয়ে , স্বপ্ন দিয়ে, দিশা দিয়ে এবং তারা বিশ্বাসকরতো আমরা পারবোই, আমাদের দ্বারা হবেই।এথেন্সে যারা ১৮ বছর পুর্ন হতো তারা কোন রাস্ট্রিয় অনুষ্ঠানে গিয়ে সবার সামনে হাত উচু করে চিৎকার করতো, যে আমি জন্মের সময় যে এথেন্সকে পেয়েছি ,আমি সারা জীবন এমন কাজ করে যাবো যে আমার মৃত্যুর সময় অনেক উন্নতর এথেন্সকে আমি পৃথিবীর বুকে রেখে যাবেএইটা হচ্ছে প্রেরণা। এই যে একবার জ্বলে উঠলো মানুষ , এই জ্বলা মশাল হয়ে উড়তে থাকবেএবং একসময় অবিশ্বাস্য কান্ড তারা করবে। সে জন্য প্রেরণাটা দরকার । আমরা এখন সবার কাছে হতাশা প্রকাশ করি। হতাশ হয়ে কি তোমার আয়ূ বাড়বে?হতাশ হয়ে তুমি কিছুপাবে?!তুমি কি উপরে যাবে? হতাশ হয়ে কি তুমি কি কিছু পাবে।তুমি কি অসাধ্য কিছু সাধন করবে? তাহলে কিসের জন্য হতাশা। আজকে যে আমরা দাড়িয়ে আছি এই সভ্যতার মাঝে ,এর একটা কণা কি হতাশা দিয়ে তৈরী হয়েছে? জীবনে ভুল হোক , মিথ্যা হোক আমরা আশাতে বিশ্বাস করি। একটা জিনিষ আমাদের দেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, শিক্ষার ব্যাপারে আমাদের অনেক আশার সঞ্চার হয়েছে।প্রত্যেকটা মানুষ আজকে শিক্ষার কথা বলে।এটাযে সরকার বলে তা নয়, এটা প্রতিটা মানুষ আজকে শুধু তা বলছে।শিক্ষা চাই, আলো চাই , জ্ঞান চাই।এক সময় রবীন্দ্রনথ বলেছিলেন , অন্ন চাই , আলো চাই , প্রাণ চাই,চাই ম্ধুসঢ়;ক্তবায়ু , চাই বল , চাই স্বাস্থ্য,আনন্দ উজ্জল পরমায়ূ,সাহস বিস্তৃত বক্ষপট চাই, কিন্তুু বুক মরা মানুষ চাইনা। তা এখন আজকে শিক্ষার কথা কেন ভাবা হচ্ছে। কারন মানুষ টের পেয়ে গেছে যে শিক্ষার মধ্যে মুক্তি । সকাল বেলায় যখন সেই ভোরের শিকারী এসে দাড়ায় আমার পুব দিগন্তে এবং তার হাতের উজ্জল বর্শা ছোড়ে মেরে আলোকের হৃদয়কে বিদীর্ন করে দেয়।ঠিক তেমনি শিক্ষা অন্ধাকারকে বিদীর্ন করে দেয়।শিক্ষা মানে মোমবাতী, শিক্ষা মানে জীবন,শিক্ষা মানে স্বপ্ন, শিক্ষা মানে আামাদের বিকাশ। প্রত্যেকটা মানুষ আজকে টের পেয়েছে যে শিক্ষায় ব্যয় করা উচিত এবং সেটাযে শুধু জনসাধারন করছে তা না , সেটা যে শুধু অভিভাবকরা করছেন তা না।বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সরকার নানানভাবে সে চেস্টা করছে।করতে করতে আজকে কি হয়েছে? আজকে দেশের সাতান্নব্বই আটানব্বই ভাগ ছেলেমেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। এর সংখ্যা প্রায় চার কোটি।এটা করতে করতে কি হয়েছে আজকে আমাদের দেশে স্কুল হয়েছে, কলেজ হয়েছে,শিক্ষক হয়েছে , ছাত্র হয়েছে,মাস্টার হয়েছে, বিল্ডিং হয়েছে, চক হয়েছে, ডাস্টার হয়েছে,সব হয়েছে সবাই আজকে স্কুল মুখী।শিক্ষার সোনার খাচাটা তৈরী হয়েছে।এখন এর মধ্যে গানের পাখীটাকে এনে এবার বসাতে হবে। গানের পাখী মানে উন্নত শিক্ষা , যে শিক্ষা দিয়ে আমাদের চলছে সে শিক্ষা আমাদের চলবেনা।এখানে ছেলে মেয়েরা বললো ডাক্তার হতে চায় ।সেবা করতে চায়।আমি অনেককে দেখেছি ডাক্তার হয়ে এসেছে। আজকে তিরিশ বছর চল্লিশ বছর যখন আমি সেই ছেলে মেয়েদের চেহারা যখন দেখি ,তখন অনেকের মধ্যে সেবার কোন চিহ্ন আমি খুজে পাইনা।আমাদের শিক্ষার কোন অর্থনাই যদি সে শিক্ষা অন্য মানুষকে কিছু না দিল।কেউ বলেন যদি একজন ছাত্র আরেকজন ছাত্রকে পড়ার সুযোগ করে দেয়,প্রত্যেকে প্রত্যেককে পড়ার সুযোগ করে দেয় তাহলে সবাই শিক্ষিত হয়ে উঠবে। কিন্তুু আমার মনে হচ্ছে যে , শিক্ষিত কয়জন? অক্ষিত কয়জন আমাদের দেশে।একজন একজন করে কি হবে? অনেক সময় দেখি কোন গাড়ীটার দাম যখন সুন্দর হয়, তখন সবাই বলে ওয়ান মোর’।আমি যদি বলি যদি বলতেই হয় ওয়ান মোর কেন ? টেন মোর , থাউজেন মোর।একটা প্রদ্বীপ যেমন হাজার প্রদ্বীপকে জ্বালায় যেমন নিজে কমেনা,তেমনি মানুষের মহত্ব হাজার হাজার মানুষকে শিক্ষিত করে তোলতে পারে। আমরা টমাস আলভা এডিসনের নাম জানি সবাই।ওনাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আপনি জীবনে কতগুলো ভুল করেছিলেন? উনি বলেছিলেন দশ হাজার । দশ হাজার তাহলেতো আপনার মাথায় তো বুদ্ধিই নেই বলতে হয়।দশহাজার যে ভুল করলেন এতে কি কোন উপকার হয়েছে আপনার। বলেযে হয়েছে অনেক। কি হয়েছে। দশহাজার ভুল করার পরে দশহাজার নতুন বুদ্ধি আমার মাথায় এসেছেএবং সেই বুদ্ধি দিয়ে আমি নতুন নতুন কাজ করতে পেরেছি।