জে. জাহেদ , চট্টগ্রাম :

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের নেতাদের নিয়ে সার্কিট হাউজে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রোববার (৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে বিমানযোগে চট্টগ্রামে এসে ওবায়দুল কাদের নগরীর পতেঙ্গায় নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল (কর্ণফুলী টানেল) পরিদর্শনে যান। সেখান থেকে বেলা ১২টার দিকে ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ্য কয়েকজন নেতা সার্কিট হাউজে প্রবেশ করেন। সেখানে নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন কাদের। দুপুর পৌনে ২টা পর্যন্ত চলে বৈঠক। এরপর বেরিয়ে যান নেতারা।

বৈঠক চলাকালে সার্কিট হাউজের মূল ফটক থেকে অন্য নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি। এমনকি বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি কোনো নেতা। তবে বৈঠক শুরুর আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে উদ্বিগ্ন না হতে বলেন ওবায়দুল কাদের।

সার্কিট হাউজে প্রবেশ করতে দেখা গেছে, দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তরের সভাপতি এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান এবং দক্ষিণের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানকে।

আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের সাধারণ সম্পাদক মহোদয় চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বসেছেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সার্বিক বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলবেন। আমরা উনার গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা নিয়ে আমাদের দলীয় প্রার্থীর জন্য নির্বাচনে কাজ করব।’ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী থাকবেন কি-না জানতে চাইলে মেয়র নাছির বলেন, ‘উনি থাকবেন না। প্রয়োজনে কাদের ভাই বললে ডেকে নেওয়া হবে।’

মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর দৃশ্যমান কোনো বিরোধিতা না থাকলেও কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সিনিয়র নেতাদের আদেশ-অনুরোধ উপেক্ষা করে শ’খানেক বিদ্রোহী নির্বাচন করতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রামে এসে বিদ্রোহীদের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বার্তা দেবেন বলে আলোচনা থাকলেও টানেল পরিদর্শনের সময় তিনি ‘চট্টগ্রামের সমস্যা চট্টগ্রামের নেতারাই মেটাবেন’ বলে কার্যত বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছেন।

বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রামের সমস্যা এখানে চট্টগ্রামের নেতারাই সমাধান করবেন। তবে কোনো সমস্যা হলে আমরা কেন্দ্র থেকে অবশ্যই সাজেশন দেব। ঢাকায়ও প্রচুর বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত এত ছিল না। এটা কমতে কমতে ১৭২ জনের মধ্যে মাত্র ১৫ জনে নেমে গিয়েছিল। ১৫ জনের সবাই কিন্তু জয়লাভ করেছে। তো, এটা নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ দেখি না। যেটুকু সমস্যা আছে, আমি আশা করি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

চট্টগ্রামে আসার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি দলের সাধারণ সম্পাদক। নির্বাচনের খোঁজখবর নেওয়ার দায়িত্ব আমার আছে। আমি সরেজমিনে দেখতে এসেছি। আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে একটা সমন্বয় কমিটি করে দিয়েছি। প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফ হোসেন সাহেবের নেতৃত্বে। সেই কমিটি কতটা কার্যক্রম করেছে এবং কতটা অগ্রগতি করেছে, সেটা দেখতে এসেছি। মনোনয়নের ব্যাপারে কোনো সমস্যা আছে কি না সেটা কমিটির কাছে জানতে চাইব।’