আলমগীর মানিক,রাঙামাটি :
রাঙামাটি শহরে সৎ মায়ের ছুরিকাঘাতে ৬ ইঞ্চির মতো গলা কেটে যাওয়ায় মুমূর্ষ অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে চার বছরের ছোট্ট শিশু ফারজান আহাম্মেদ। রোববার সকালে শহরের কোর্ট বিল্ডিংস্থ সোনালীবাগ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘাতক সৎ মাকে এলাকাবাসীর সহায়তায় আটক করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। শিশুটি বর্তমানে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। প্রচুর রক্তক্ষরণে ছেলেটির ফিফটি ফিফটি অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ শওকত আকবর খান। তিনি জানান, ছোট্ট শিশুটির গলায় অন্তত ৬ ইঞ্চির মতো কেটে দেওয়া হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণে ছেলেটি নিস্তেজ হয়ে গেলে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ সদস্য শিশুটিকে তাৎক্ষনিকভাবে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়। পরবর্তীতে তাকে অস্ত্রোপাচার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

শিশুটির আপন মা ফারজানা আক্তার জানিয়েছেন, দুপুরে রাঙামাটি শহরের সোনালী বাগ এলাকায় সৎমা ছুরি দিয়ে গলা কেটে দিলে এই ঘটনা ঘটে। পরে ছেলের চিৎকারে ফারজানের মা ছুটে আসলে তাকেও হত্যরা চেষ্টা চালায় সৎমা। মা ফারজানা চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ঘাতককে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় শিশুটিকে দ্রুত রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা জরুরীভাবে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আরএমও।

আহত শিশুর মা ফারজানা আক্তার জানান, সে রোববার দুপুরের দিকে বাসার ছাদে কাপড় শুকাতে গেলে এক পর্যায়ে আমার স্বামীর প্রথম স্ত্রী কাউসার ফেরদৌস বাসায় এসে আমার শিশুকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে গলায় ছুরি চালিয়ে দেয়। এ সময় আমার ছেলে খুব জোরে চিৎকার করতে থাকে। আমার ছেলে চিৎকার শুনে আমি রুমে আসলে দেখি আমার ছেলেকে সে ছুরি দিয়ে কাটছে। আমাকে দেখে সে আমার ছেলেকে ছেড়ে আমাকে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে তারা করে।

পরে আমার চিৎকার শুনে আস পাশের লোকজন এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে করে। ঐ মহিলাকে আটক করে আমার ছেলেকে স্থাণীয়দের সহযোগিতায় রাঙামাটি সদর হাসপাতলে নিয়ে আসে। রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ শওকত আকবর জানান, মুমুর্ষ অবস্থায় শিশুটিকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের ডাক্তারদেও সহযোগিতায় আমরা শিশুটি চিকিৎসা দিচ্ছি। গলায় প্রায় ৫ থেকে ৬ ইঞ্চির মতো কাটা গেছে। তাৎক্ষনিক পুলিশের সদস্যরা ব্লাড দিয়েছে বলেই শিশুটিকে ব্লাডও দিতে পারছি।

রাঙ্গামাটি সদর সার্কেল অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ জানান, পুলিশ খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারী মহিলাকে আটক করতে সক্ষম হয়। আহত শিশু ফারজানের মায়ের বক্তব্যে শুনে আমরা আইনী প্রক্রিয়া শুরু করবো। তিনি বলেন, শিশুটি অবস্থা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে ডাক্তার তার চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।