আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জলবায়ু চুক্তিটা হয়েছিল প্যারিসে, ২০১৫ সালে। গোটা দক্ষিণ ফ্রান্সে জারি করতে হয়েছিল লাল সতর্ক সংকেত।

ওই চুক্তির নিয়মকানুন ঠিক করতে স্পেনের শহর মাদ্রিদে আলোচনায় বসেছে বিশ্বের দেশগুলো। এ বছরই জার্মানিতে গরমে অতিষ্ঠ ছিলেন ১৭ বছরের তরুণ থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধ। গরমে মৃত্যুও ঘটেছে ইতালিতে। শুধু ইউরোপ নয়, গরমে হাঁসফাঁস করেছে অস্ট্রেলিয়া, জাপানও। আগে এমন তাপপ্রবাহ দেখা যেত শতকে একবার। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামীতে অনেক ঘন ঘন দেখা দেবে এমন তাপপ্রবাহ।

কারণটা কারও অজানা নেই। আমরাই গরম করে তুলছি আমাদের একমাত্র আশ্রয়। কতটা? তার খতিয়ান দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও)’। তাদের রিপোর্ট জানিয়েছে, প্রাক্-শিল্পযুগের (১৮৫০-১৯০০) থেকে পৃথিবী এখন ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি গরম। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানাচ্ছে, আগের তিনটি দশকই ছিল তার আগেরটির থেকে গরম। ‘গ্রিনহাউস’ গ্যাস নিঃসরণ ক্রমশ বেড়ে চলায় পৃথিবীর ইতিহাসে বর্তমান দশকই হতে চলেছে সবচয়ে গরম। সবচেয়ে গরম তিনটি বছরের তালিকায় ২০১৯ থাকছে এক নম্বরে।

গ্রিনহাউস গ্যাসের ৯০ শতাংশ তাপ শুষে নেয় সমুদ্র। রেকর্ড করে ফেলছে তার তাপমাত্রাও। দেড়শ বছর আগে যতটা ছিল, সাগরের জলের অম্লতা এখন তার চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি। গত ১২ মাসে গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলেছে অন্তত ৩২ হাজার ৯০০ কোটি টন। যার ফলে সমুদ্রতলের গড় উচ্চতাও রেকর্ড করেছে এ বছর।

বিপদটা শুধু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নয়। বর্তমানের কোটি কোটি মানুষের বিপদ ডেকে আনছে জলবায়ু পরিবর্তন, জলস্তর বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা। ডব্লিউএমও-র রিপোর্ট বলছে, ২০১৯-এর প্রথম ছ’মাসে এক কোটিরও বেশি মানুষকে ভিটেমাটি ছেড়ে দেশের অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে। তার মধ্যে ৭০ লাখকে সরতে হয়েছে ঝড়-বন্যা-খরার কারণে।

মাদ্রিদে ২০১৫-র প্যারিস জলবায়ু চুক্তির নিয়ম-কানুন স্থির করার কাজ চলছে। শিল্প-যুগের তুলনায় এই গ্রহের তাপমাত্রার বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের অনেকটা নিচে রাখার পথ খুঁজছে বিশ্বের দেশগুলো। সবাই অবশ্য নয়। চুক্তিতে সই করেও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন প্যারিস চুক্তি থেকে সরে যাওয়া প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।