মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কুঃ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব বিছামারা ও চাকঢালা এবং বাইশারী ইউনিয়নে চলছে অবাধে পাহাড় কাটার মহোৎসব। এসব এলাকার পাহাড় খেকোরা পরিবেশ সংরক্ষণ আইনকে তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অগোচরে বেড়েই চলেছে পরিবেশ বিধ্বংসী পাহাড় কাটার মত ঘটনা। এর ফলে দিন দিন ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব বিছামারা মাছন ঘোনা এলাকায় বিশাল বিশাল সরকারি খাস পাহাড়ি জায়গা বিক্রি করছে এবং বিক্রি করা পাহাড়ে কেলা মাছন ও তার মেয়ে ফাতেমা বেগম লাফিওর নেতৃত্বে পাহাড় কেটে বাড়ী নির্মান করছে রোহিঙ্গা ক্রেতারা। এছাড়াও উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাকঢালার গয়ালমারা ও বাইশারী ইউনিয়নের লম্বাবিল, উত্তর বাইশারী, নারিচবুনিয়া, হলুদ্যাশিয়া এলাকায় চলছে সমান তালে পাহাড় কাটা।

ঐসব এলাকার চানোমং মার্মা,হাশেম,মনিরসহ কয়েকজন লোকের সাথে কথা বলে জানা যায়,সরকারী পাহাড়ি খাস জায়গা বিক্রির পাশাপাশি পাহাড় কেটে চড়া দামে মাটি বিক্রি করছে কতিপয় অসাধু ব্যক্তিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় এসব পাহাড়ের জমি রোহিঙ্গাদের মোটা অংকের টাকায় বিক্রি,বসতঘর নির্মাণ, ভরাট হচ্ছে ফসলি জমি, ভিটেবাড়ী এবং যাচ্ছে ইট ভাটায়ও। নিয়মিত এভাবে পাহাড় কাটা চললেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এজন্য বেপরোয়া হয়ে উঠছে পাহাড় খেকোরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্কুল শিক্ষক জানান- উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে পাহাড়ের মাটি দিয়ে ফসলি জমি ভরাটের ফলে দিন দিন কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। উঠছে নতুন নতুন বিল্ডিং। কৃষকরা জমি না পেয়ে কৃষি কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্যান্য কর্মে জড়িয়ে পড়ছেন।

চাকঢালা এলাকার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল্লাহ জানান, ৫ নং ওয়ার্ডের গয়ালকাটা নামক এলাকার বাসিন্দা মৃত শামশুল আলমের পুত্র আজিজুর রহমান বসত বাড়ী সংলগ্ন পাহাড় থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। ওই মাটি নিয়ে ভরাট হচ্ছে ফসলি জমি। এতে ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ।
পূর্ব বিছামারা এলাকার মোহাম্মদ হোছন উরফে কেলা মাছন ও তার মেয়ে ফাতেমা তার স্বামী ছৈয়দ হোসেন বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাদের কাছে মোটা অংকের টাকায় সরকারী পাহাড় বিক্রির ও পাহাড় কাটার অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাতেমা সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দখলিয় জায়গা বিক্রি করছি এবং সে খানে মাঠি কাটা হচ্ছে তো কি হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশকে আমরা ভয় পায় না। কারণ টাকা দিলে সব ম্যানেজ হয়ে যায়। আপনাদের ও ম্যানেজ করা হবে।

মাটি কাটার সত্যতা স্বীকার করে আজিজুর রহমানের স্ত্রী জানান- বাড়ী নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটা হচ্ছে, বিক্রির জন্য নয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি বলেন,বাইশারী এবং সদর ইউনিয়নের গয়ালমারা ও মাহাছন ঘোনায় পাহাড় কাটার বিষয়ে আমি শুনেছি। এসব এলাকায় শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।