শাহরিয়ার মোহাম্মদ ইয়ামিন

আগে কিছু তথ্য তুলে ধরা যাক।
★১৯৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৫৭ হাজার এগারোটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। যার পিছনে অন্যতম কারণ হলো তাদের সংস্কৃতি!
★১৯৭৫ সালে মাদকাসক্ত মার্কিন লোক ১৯ ভাগ। কিন্তু ১৯৭৮ সালে এসে সেটি দাঁড়িয়েছে ৪৯ ভাগে! যা এখনো ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে!

★১৯৭৪ সালে নিউ ইয়র্কে ১ লাখ ২০ হাজার আটশো ঊনত্রিশটি গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছে। গর্ভপাত ও জন্মদানের অনুপাত ১১৩৮:১০০০। আর গর্ভপাতকারী নারীদের মধ্যে ৬৭ভাগ অবিবাহিত!!

★নিউ ইয়র্কে সমকামীর সংখ্যা হলো ১০ লাখ ২ হাজার!

★ক্যালিফোনিয়ার “লস এঞ্জেলস বিশ্ববিদ্যালয়ে” শতকরা ৮৪ ভাগ ছাত্রছাত্রী সমকামী!

★যুক্তরাষ্ট্রে যৌনব্যাধির হাসপাতালের সংখ্যা ৬৫২টি। যা যক্ষা ব্যতীত সব রোগের হাসপাতালের সংখ্যার চেয়ে বেশি!

★সুইডেন (পাশ্চাত্য) পৃথিবীর ধনাঢ্য দেশগুলোর একটি। সামাজিক নিরাপত্তা ও আত্মনির্ভরশীলতায় অন্যতম। কিন্তু তাদের বড় সংখ্যক লোক স্নায়ু বিকল বা মানসিক রোগী! অথচ, তাদের কোন দিক দিয়ে অভাব নাই! প্রশ্ন হচ্ছে তবুও কেন এত লোক মানসিক রোগে আক্রান্ত❓ শুধু তাই নয়, সরকারি বাজেট এর ৩০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয় এই মানসিক রোগীর পিছনে!
[ তথ্য সূত্র: আগামী দিনের পৃথিবী-আব্দুল্লাহ আযযম (রহ.) ]

উল্লেখিত বিষয়াবলীর ভিত্তিতে একটু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি।

প্রথমত, সংস্কৃতি কি??
সংস্কৃতি (Culture) হল বিভিন্ন সমাজে প্রাপ্ত সামাজিক আচরণ ও নিয়ম কানুনের সামষ্টিক বহিঃপ্রকাশ। (ব্যাক্তি ও পরিবেশভেদে সংজ্ঞার ভিন্নতা থাকতে পারে)
দ্বিতীয়ত, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এর মধ্যে পার্থক্য কি??
প্রাচ্য বলতে এশিয়া মহাদেশ কে বুঝায়। আর পাশ্চাত্য বলতে ইউরোপ-আমেরিকা কে বুঝায়।

বিশ্লেষণ: প্রাচ্য তথা এশিয়া মহাদেশ এর সংস্কৃতি হচ্ছে পৃথিবীর অন্যান্য মহাদেশের সংস্কৃতির চেয়ে সুন্দর ও গুছালো! এক কথায় প্রশ্নবিদ্ধ সংস্কৃতি নয় বলা যায়!
অন্যদিকে পাশ্চাত্য অর্থাৎ ইউরোপ-আমেরিকার মানুষরা তাদের নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে বিব্রত! একটা দেশের সংস্কৃতি পরিবর্তন করা খুব একটা সহজ ব্যাপার না! যদি সহজ হতো, তাহলে তারা (ইউরোপ-আমেরিকা) সংস্কৃতি পরিবর্তনে উঠেপড়ে লাগতো! আমি পাশ্চাত্যের সংস্কৃতি কে আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। যদিও তাদের দেশে চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি হয় না! কিন্তু প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে ব্যভিচার, যৌনতা ও যৌন-উন্মত্ততায় লিপ্ত থাকে! যেটা আইয়ামে জাহেলিয়াতের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য!
কিন্তু দুঃখ হচ্ছে শুধু একটি জায়গায়! এই অভিশপ্ত (পাশ্চাত্য) সংস্কৃতি আমাদের তথা পুরো এশিয়া মহাদেশজুড়ে শিরা-উপশিরায় মিশে যাচ্ছে! প্রতিনিয়ত আমাদের গ্রাস করে চলছে পশ্চিমা (পাশ্চাত্য) সংস্কৃতি! যার ফলাফল খুবই ভয়াবহ! তাদের সংস্কৃতি এভাবে ছড়িয়ে যাওয়ার পিছনে আমি একটা কারণ বের করতে সক্ষম হয়েছি। সেটা হচ্ছে, সাধারণত ইউরোপীয় দেশগুলো উন্নত ও ধনাঢ্য! তাই তারা পৃথিবী ব্যাপী ঘুরে বেড়ানোর বেশ সামর্থ্য আছে, প্রযুক্তিখাতেও বেশ সমৃদ্ধ! যার ফলে তারা বিশ্বব্যাপী তাদের সংস্কৃতি কে প্রসারিত করতে সক্ষম হয়েছে! তাছাড়া, প্রাচ্যের মানুষ কারো অধীনে থাকতে চায়না বরং সাম্রাজ্য বিস্তারে খুবই তৎপর! সেই আদিকাল থেকে তারা বিভিন্ন ভূখন্ড কে তাদের আয়ত্তে রাখতে সর্বদা সচেষ্ট থাকতো। ইতিহাস সেটায় প্রমাণ করে! যার ফলে তাদের সংস্কৃতি আরো বেশি প্রসারিত হলো! না হয় একটা বিষয় লক্ষ করে দেখেন, আমি আপনি যে দেশে বসবাস করি, সে দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে আমরা কতটা অবগত? কতটা সচেতন? নিজেদের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ করতে আমাদের উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ আছে কি না? এটিই প্রমাণ করে আমরা কতটা উদাসীন আমাদের সংস্কৃতির প্রতি!

আচ্ছা শেষে একটা প্রশ্ন করি, কখনো কি ভেবেছেন প্রতিনিয়ত যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশের মানুষ কেন ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, নেপাল অর্থাৎ এশিয়া মহাদেশ ভ্রমণে আসে?? উত্তর বের করতে নিজেরা একটু ভেবে দেখি..!

যাইহোক, এটা সত্যি যে আমাদের সংস্কৃতি এখন বিনাশের পথে! অবাক হলেও বলতে হবে, কিছুদিন পর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য যাদুঘরে আমাদের সংস্কৃতি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা! অন্যদিকে সবাই পাশ্চাত্যের নির্লজ্জ বা অভিশপ্ত সংস্কৃতিতে মেতে উঠবে! জানিনা এই দেশ তথা পুরা ভারত উপমহাদেশ রক্ষা পায় কি না…! তবে, প্রতিরোধ এর ক্ষেত্রে তরুণরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করি…

লেখক: শিক্ষার্থী, মহেশখালী।