আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ঠিক এক মাস আগে বাড়তি আধা সেনা মোতায়েন করে কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল পুরো কাশ্মীর উপত্যকা। আর তার পরেই সংসদে বাতিল করা হয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি অনুযায়ী উপত্যকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। কিন্তু তারপরেও নিরাপত্তা বাহিনীর কড়াকড়ি কিন্তু কমেনি।

এই অবস্থায় দিল্লিতে জম্মু-কাশ্মীরের পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য, স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবারের ওই বৈঠকে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যেই পুরো উপত্যকা থেকে অতিরিক্ত সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

কেন্দ্রের আশা, বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী সরিয়ে নেওয়া শুরু করলেই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসবে কাশ্মীর। এর মধ্যেই মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর ভর্তি পরীক্ষায় পুরো কাশ্মীর থেকে প্রায় ২৯ হাজার যুবক অংশ নেওয়ায় বেশ উৎসাহী কেন্দ্র। শাসক দল মনে করছে, কাশ্মীরি যুবকদের চাকরির সুযোগ দিতে পারলে এমনিতেই বিচ্ছিন্নতাবোধ এবং সন্ত্রাসবাদ কমে আসবে।

কিন্তু এর পাশাপাশি দিল্লি থেকে শ্রীনগরে ফিরেই ফের গৃহবন্দি হয়েছেন শহরের মেয়র জুনেইদ মাট্টু। গত ৫ আগস্ট তাকে গৃহবন্দি করা হয়। এরপর চিকিৎসার জন্য দিল্লি যেতে দেওয়া হয় তাকে। সেখানে গতকাল এক সাক্ষাৎকারে কাশ্মীরে ধরপাকড় এবং রাজনীতিকদের আটক করার নিন্দা করেন তিনি। তার মতে, উপত্যকা স্বাভাবিক হওয়ার আশা একেবারেই অবাস্তব।

কেন্দ্র বাড়তি বাহিনী সরিয়ে উপত্যকায় ছন্দ ফেরানোর আশা করলেও সেখানকার পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যরা কিন্তু নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন। মঙ্গলবারের বৈঠকে তাদের বড় অংশই নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবি জানান। তারা বলছেন, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তাদের ও পরিবারের নিরাপত্তার দিকটিও সরকার দেখুক। পঞ্চায়েত সদস্যদের উপর হামলার যে আশঙ্কা রয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন অমিত শাহ। আগামী দিনে তাদের নিরাপত্তারক্ষী দেওয়ার পাশাপাশি দু’লাখ টাকার জীবন বিমা করানোর ব্যাপারেও প্রাথমিকভাবে রাজি হয়েছেন তিনি।

আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আবারও কাশ্মীর মর্যাদা ফিরে পাবে এমন আশ্বাসও দিয়েছেন অমিত শাহ। গান্ডেরবাল এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য নাজির আহমেদসহ অনেক নেতাই বলেছেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের ফলে জমি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন উপত্যকার মানুষ। তাদের আশ্বস্ত করে অমিত শাহ বলেছেন, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের অধিকার কোনোভাবেই ক্ষুণ্ন হবে না।