‘যতই চাপাচাপি করেন আপনি জাসদ, আওয়ামীলীগ নন’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

সম্প্রতি জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বোয়ালখালী উপজেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে জাসদ নেতা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদল উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন ‘পকেট কমিটি না করে কাউন্সিলরের মাধ্যমে কমিটি করে ঐক্যবদ্ধ আ’লীগ গড়ার’।

যা নিয়ে কি ইংগিত করে তিনি এবং বোয়ালখালী আওয়ামী রাজনীতিতে তার এই মন্তব্য নিয়ে মাঠে উত্তাপ ছড়িয়েছে। চারদিকে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা করা হচ্ছে।

এনিয়ে নানা স্যোশাইল সাইটে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমপি বাদলকে আওয়ামী রাজনীতি নিয়ে মাথা না ঘামানোর অনুরোধ ও অনুরাগ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

বোয়ালখালী পৌরসভা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম মিজানুর রহমান বাপ্পী নামে এক যুবলীগ নেতা একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যেটি পরে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস.এম বোরহান উদ্দিন শেয়ার তার টাইমলাইনে শেয়ার করলে বোয়ালখালী রাজনীতির মাঠে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

যুবলীগ নেতা এম মিজানুর রহমান বাপ্পীর ফেইসবুক স্ট্যটাসটি হুবহু পাঠকের জানার াগ্রহে শেয়ার করা হল-“এমপি মহোদয়,,,মঈন উদ্দিন খান বাদল সাহেব আপনি এমপি ঠিক আছে, কিন্তু আপনি জাসদ, আওয়ামী লীগ নন। আপনি আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে কথা বলছেন, কিন্তু আপনি হয়তো ভূলে গেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমাদনে জেলা কমিটি আর জেলা আওয়ামী লীগের অনুমোদনে উপজেলার কমিটি হয়, আর বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিও ঠিক জেলা আওয়ামী লীগের অনুমোদনে হয়েছে এবং তা রিয়াল কমিটি, এখন আপনার কাছে যদি সেটা পকেট কমিটি হয় তাহলে, জাসদের অনুমোদনে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি হইলে কি সার্বজনীন কমিটি হবে…?

আর জাসদ অনুমোদনে কি আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের এক্তিয়ার আছে নাকি…? আর জাসদের অনুমোদনে কি আওয়ামী লীগের কমিটি হয়…?

জাসদের অনুমোদনে কখনো আওয়ামী লীগের কমিটি হয় না, মনে রাখবেন। আপনি যে ভাবে বলছেন মনে হচ্ছে জাসদের অনুমোদনে আওয়ামী লীগের কমিটি হয়।

আপনার জাসদের কমিটি নিয়ে তো আওয়ামী লীগের কোন নেতা কর্মি কথা বলে না, কারণ সেটা আওয়ামী লীগের কিছু না, জোট মাত্র। বঙ্গবন্ধু কন্যা কখনোই আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে কথা বলার জন্য নিশ্চয়ই আপনাকে কখনো কিছু বলেননি, এবং বলবেনও না।

আশা করি আপনি আওয়ামী লীগ নিয়ে কথা না বলাটায় ভালো। আপনি আওয়ামী লীগের কিছুই না। আপনি জোট গত ভাবে নমিনেশন পেয়ে এমপি হয়েছেন, তাও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমদ মোছলেম ভাইয়ের নেতৃত্বে। তাই বলে আপনি আওয়ামী লীগ হয়ে যাননি। যতই চাপাচাপি করেন আপনি জাসদ, আওয়ামী লীগ নন।

আর আপনি এমপি এমনিতে হয়ে যাননি, বঙ্গকন্যা মমতাময়ী দেশরতœ শেখ হাসিনা’র নির্দেশে সকল আওয়ামী লীগের নেতা কর্মি সহ একত্রিত হয়ে সহযোগিতা করে আপনাকে এমপি বানিয়েছেন, তাই আজ আপনি এমপি হয়েছেন।

এমন কি সবাইকে এক করেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন সাহেব। এবং নির্বাচনে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়েননি তিনি।

আর আজ আপনি অকৃতজ্ঞের মতো কথা বলছেন, আসলেই আপনি অকৃতজ্ঞ। নেত্রীর নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আজ আপনাকে এমপির আসনে নিয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ পরিবার। আর আপনি সে আওয়ামী লীগ পরিবার নিয়ে কথা বলছেন।

আপনি নিজে চলাফেরা করেন বিএনপি নিয়ে, তার বড় প্রমাণ হলো আপনার নিজের ভাই, আপনার ঘরে আওয়ামী লীগের বিরোধীদলীয় মানুষ স্বয়ং আপনার ভাই যিনি বিএনপি করেন (মুকুল)। আর আপনি তাকে নিয়ে চলাফেরা করেন। এটা কোন দোষ না…?

টেন্ডার বাজি করেন আপনার সে ভাই, থানায় দালালী করেন আপনার সে ভাই, কোটি টাকা বানিয়েছে আপনার সে ভাই (মুকুল) এগুলো কোন দোষ না…? আপনার ভাইয়ের ব্যবসা কি…? এতো টাকা সে কোথায় থেকে পেয়েছে….?

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষিয়ান নেতা এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহাকে নিয়ে আপনি কথা বলছেন। কোন অধিকারে…? আপনি আওয়ামী লীগের কি…? জনম জনম তো জাসদ করে আসছেন, এখননো জাসদ, আর একজন জাসদের লোক কেন আওয়ামী লীগ নিয়ে মাথা ঘামাবেন..?

বোয়ালখালীর সকল উন্নয়নের দায়িত্ব আপনার, কারণ আপনি বোয়ালখালীর এমপি, আপনার উচিৎ বোয়ালখালী বাসিকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসানো, কিন্তু আপনি বোয়ালখালী বাসিকে ভাসাচ্ছেন কর্ণফুলি নদীর জলে।

আপনি যখন প্রথম নির্বাচন করেছেন তখন কথা দিয়েছিলেন কালুরঘাট রেল সেতু থেকে নতুন ব্রীজ পর্যন্ত বেড়িবাঁধ ও পাথর ফেলে নদী ভাঙ্গন রোধ করবেন, এবং কালুরঘাট নতুন সেতু তৈরি করে দিয়ে বোয়ালখালী তথা দক্ষিণ চট্টলার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিবেন।কই সে পাথর আর ব্রীজ, আজ এগার বছর রানিং আপনার দেয়া কথার কোনটাই হলো না। আপনার কথার কোন জমাখরচ আছেন মহোদয়…?

আমার মনে হয় আপনি মৃত্যুর সময়ও মিথ্যে কথা বলবেন আর নিজের দোষ ঢাকতে অন্যের উপর দোষ ছাপিয়ে যাবেন। আপনি তো বিভিন্ন মিটিং ও সংসদে দাড়িয়ে বড় গলায় বড় বড় কথা আর খুব যুক্তি তুলে ধরেন, একটি বার আপনি আপনার বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজে নিজেকে প্রশ্ন করে দেখবেন আপনি কতটুকু সৎ ও ন্যায় পরায়ন, আপনি কথা দিয়ে কথা রাখতে পেরেছেন কি না, আরো অনেক প্রশ্ন এবং এগার বছরে আমি কি উন্নয়ন করেছি এই বোয়ালখালীর জনম দুঃখি মানুষ গুলোর জন্য…?

তখন আপনার সব ভাওতাবাজি প্রশ্নের উত্তর আপনি নিজেই পেয়ে যাবেন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আদালত মানুষের “বিবেক” সে আদালতে আপনি যদি নির্দোষ হয়ে থাকেন,আপনি মনে করেন, তাহলে আপনি দোষী নন।তবে হ্যাঁ পূর্ণ ঈমানের সাথে বিবেচনা করবেন।

আর এখন নিজের দোষ, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে মোছলেম ভাই’কে ও আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিদের টানাটানি করছেন কেন…? এটাই কি আপনার রাজনীতি…?

স্ট্যটাস লিংকটি https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2302397083354782&id=100007535382961

যা সত্যি তা বলেছি,এখন আপনি যখন এমপি আপনি চাইলে অনেক কিছু করতে পরেন,হয়তো কোন প্রকার হয়রানি বা মিথ্যে মামলা, হামলা বা অপরাধ মূলক কোন কিছু বা মিথ্যে অন্যায় কোন অভিযোগ বা যে কোন মিথ্যে কিছু দিয়ে হয়’তো আমাকেও হেনস্তা করতে পারেন। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন সত্য বলতে কোন ভয় নেই, চামড়া পাল্টাইন্নে কতো গুলো আপনার সাথে আছেনা ঐগুলোকে নিয়ে বলুন।

ভূলে যাবেন না আপনি আওয়ামী লীগের কেউ না, আর এটাও ভূলে যাবেন না। ৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বানাতে চেয়েছিল বাম’রা ইতিহাস আপনি যেমন জানেন, বাকিরাও অনেক কিছু জানেন, সব জান্তার জান্তা নন আপনি।”

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এস.এম বোরহান উদ্দিন এর শেয়ার করা সেই স্ট্যটাসে সাইফুদ্দীন মোহাম্মদ মানিক নামে একজন কমেন্টস করেন, ‘জাসদ কি আর আওয়ামী লীগের দরদ বুঝবে’।