প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

ওলামা-মাশায়েখ পরিষদ চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ভারত সরকার দেশের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা এবং জনগণের স্বায়ত্বশাসনের বিলোপ ঘটিয়ে জম্মু কাশ্মির এবং লাদাখ দু‘টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে সৃষ্টি করার ঘোষণা দিয়ে সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার হরণ করেছে। ভারত সরকার মুসলিম জাতিসত্বা এবং সে দেশের দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ভারত সরকার ইতোমধ্যে অনেক নেতা এবং নিরীহ নাগরিকগণকে গণহত্যা, নারী-শিশু ধর্ষণ ও গণগ্রেফতার করে লোমহর্ষক অবস্থার সৃষ্টি করেছে যা জঘণ্য অন্যায়, অমানবিক ও আন্তর্জাতিক আইনের চরম লংঘন এবং মানবাধিকার পরিপন্থি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, যে কাশ্মিরকে বলা হতো “প্যারাডাইজ অব আর্থ“ অর্থ্যৎ পৃথিবীর ভূস্বর্গ। ১৯৪৭ সালের পর থেকেই ভারত সরকার জম্মু কাশ্মিরের সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের মতামত উপেক্ষা করে সামরিক শক্তির জোরে দখল করে রেখেছে। জম্মু ও কাশ্মিরের মুসলমানদের স্বাধীনতার প্রশ্নে জাতিসংঘে ১৯৪৮সালে গণভোটের সিদ্ধান্তকারী প্রস্তাব গৃহীত হয়। ভারত সে প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু তা রক্ষা করেনি। জম্মু কাশ্মিরের মুসলমানদের উপর ৭২ বছর পর্যন্ত চরম জুলুম নির্যাতন ও গণহত্যা চালাচ্ছে এবং মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। ওলামা-মাশায়েখ নেতৃবৃন্দ কাশ্মিরের গণহত্যা বন্ধ এবং স্বাধীনতাকামী জনগণের নাগরিক এবং সংবিধানিক অধিকার ফিরেয়ে দেয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।

চট্টগ্রামের ওলামা-মাশায়েখ নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ২০১৬ সালে ভারতের হাইকোর্টে যে রায় দেয়া হয় তাতে বলা হয় জম্মু ও কাশ্মির কোন সময় ভারতের অংশ ছিল না এবং এখনো এর অংশ নয়। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং অনুচ্ছেদে এই রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে যা সংশোধন, বাতিল বা রদ করা যাবে না। কাম্মিরের জনগণের দাবী এই কাশ্মির শুধু কাশ্মিরীদের। কাশ্মিরকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়াই এই কাশ্মির সমস্যার একমাত্র সমাধান। নেতৃবৃন্দ কাশ্মিরকে রক্ষা করার জন্য গণহত্যা বন্ধ, ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রত্যাহার ও অবিলম্বে জম্মু-কাশ্মির ও লাদাখকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করার ঘোষণা প্রত্যাহার এবং খুন,ধর্ষণ ও নির্যাতন বন্ধের জন্য মুসলিশ রাষ্ট্র,জাতিসংঘ এবং ওআইসিসহ সকল মানবাধিকার সংস্থা এবং শান্তিকামী দেশ ও জনগণের প্রতি কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদাত্ত আহবান জানান।

চট্টগ্রাম উলামা-মাশায়েখ পরিষদের উদ্যোগে বাদ জু’মা দামপাড়া জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্বে করেন, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন অধ্যক্ষ মাওলানা মিয়া মুহাম্মদ হোছাইন শরীফ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মহিউদ্দিন,মুহাম্মদ ইলিয়াছ ও মকবুল আহমদ প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাজীর দেউরীর মোড়ে গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।