মুহিব উল্লাহ মুহিব :

আজ এসএসসি এবং দাখিল পরীক্ষার্থীর ফলাফল প্রকাশিত হতে যাচ্ছে, এসএসসি এবং দাখিল পরীক্ষার্থীর এর ফলাফল প্রার্থী ছাত্র-ছাত্রীর প্রতিবেশী,আত্মীয়-স্বজন এবং অবিভাবকদের উদ্দেশ্য করে লেখাটি।প্রথমত আপনার ছেলে-মেয়েকে সঠিক পথে শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, কথাটি আপনাকে অবশ্যই মেনে নিতে হবে, আপনি মেনে নিতে বাধ্য না হলে কেন ছাত্র-ছাত্রীদের মুখ দিয়ে এমন কথা বের হয়?

আলোচনার সারাংশঃ এসএসসি এবং দাখিল পরীক্ষার্থী এর ফলাফল প্রার্থী কয়েকজন ছাত্রের মুখে এমন কথা শুনার জন্য একেবারেই প্রস্তুত না। কথোপকথন নিজেরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে ছিল। তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে তাদের কথায় মনোনিবেশ করেছি।তাদের মুখের ভাষ্য: আগামীকাল বাড়তি টাকা, রোল নং, রেজিঃ নং লিখে এবং কিছু পরিধেয় কাপড় চোপড় নিয়ে বের হবো। রেজাল্ট খারাপ হলে বাড়িতে জায়গা হবেনা, তাই দুরে কোথাও গিয়ে কোন একটা কর্ম করে বাকি জীবনটা কাটাবো।একদিন না একদিন তো মৃত্যু বরণ করতে হবে, না হয় একটু আগে মরলাম।বাধ্য হয়ে না হয় সেটাই করবো, কয়েক জন সহপাঠী মিলে এমন ইত্যাদি কথায় একীভূত হলো।

এই কমন বিষয় গুলো নিয়ে প্রতি বছর সারা দেশে আত্মহত্যা করে অনেক ছাত্র-ছাত্রী মারা যায়, যার জন্য শতভাগ অবিভাবক, প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-স্বজন দায়ী। তাদের কথা গুলো শুনে প্রথমেই সেই হতভাগ্য অবিভাবকদের পরিচয় জানতে ইচ্ছে জাগে! হতভাগ্য অভিভাবক করেন কি জানেন? কেন পাশ করা ছেলেকে মিষ্টি মুখ করান? মিষ্টি তো তাকেই খাওয়াবেন যে ফেল করেছে, ফেল করা ছেলেরাই তো আল্লাহর বিশেষ মেহমান‌।বিশেষ কিছু দেওয়ার জন্য তাদেরকে আল্লাহ অপেক্ষমান রেখেছেন।বিশ্বের ইতিহাসের পাতায় নয়ন বুলিয়ে দেখলে সেই ফেল করা ছেলেরাই প্রথম কাতারে দাঁড়িয়ে পাশ করা ছেলেদেরকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মাইক্রো সফটওয়্যারের মালিক ছিল একজন ফেল করা ছাত্র, কিন্তু ওনার কাজের কর্মচারী ছিল ক্লাস ফ্রেন্ড,সে সব সময় প্রথম শ্রেণিতে পাশ করে উত্তীর্ণ হতো।

আপনি একজন অবিভাবক হয়ে কিভাবে পারেন ছেলে-মেয়েকে ফেলের কলঙ্ক স্থায়ীভাবে গায়ে জড়িয়ে তাদের প্রতিভাকে জবাই করতে? তাঁরাই তো আগামীদিনের প্রধান আকর্ষণ হয়ে পাশের দলিল নিয়ে জাতিকে চমকে দিবে। অবিভাবক হিসেবে আপনাদের কাছ থেকে সে সুযোগ টুকু পাওয়ার অধিকার কি তাদের নেই? অধিকার উম্মুক্ত করেন, তাদের শান্তনা দিয়ে অনুপ্রাণিত করুন, অহেতুক কথা বার্তা না বলে ভালো শিক্ষা দিন। আপনি দেখবেন আপনার সেই ছেলে/মেয়ে টি আগের পরিচিত মুখ হিসেবে সুবার্তা নিয়ে আপনার কাছে ফিরে এসেছে। ধন্যবাদ

মুহিব উল্লাহ মুহিব
কক্সবাজার সরকারি কলেজ, বাংলা বিভাগ।