মোঃ জয়নাল আবেদীন টু্ক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান)থেকেঃ
উপজাতী সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বৈসাবি’কে ঘিরে পাহাড়ি পল্লীগুলোর ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের আমেজ। ইতোমধ্যে এলাকা ভিত্তিক নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবকে বরণ করে নেওয়ার যাবতীয় আয়োজন।

বৈসাবীকে কেন্দ্র করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তরুর-তরুনীরা একে অপরকে পানিতে ভিজিয়ে দিয়ে পুরনো বছরের সব পাপ, গ্লানি, ক্লান্তি আর অসংগতি ধুয়ে-মুছে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। সর্ববৃহৎ এ সামাজিক উৎসব দেখতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশাপাশি এলাকাবাসীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ী পল্লী। তাদের ধর্মীয় প্রধান এ উৎসবকে ঘিরে উপজাতী পল্লী গুলো সাজছে বর্ণিল অয়োজনে।

আয়োজক কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, ক্যায়াং দর্শন ও সমবেত প্রার্থনার মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে (১৪ এপ্রিল) রবিবার থেকে শুরু হবে এ উৎসব। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর বাইশারী, সোনাইছড়িসহ ইউনিয়ন পর্যায়ে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সম্প্রদায়ের পাড়াগুলোর বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন, ক্লাব, সমিতির উদ্যোগে সাংগ্রাইং পোয়ে জলকেলি উৎসব পৃথক ভাবে অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবের দিনগুলোতে আনন্দে হয়ে উঠবে পাহাড়ি ও বাঙালির সম্প্রীতির এক মিলনমেলা। ১৪ এপ্রিল শুরু হয়ে উৎসব শেষ হবে ১৭ এপ্রিল। শান্তিপূর্ণ বৈসাবি উৎসর পালনের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি-বাঙ্গালির মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি ও ঐক্য আরো সু-দৃঢ় হোক এই প্রত্যাশা এখন সকলের।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ধুংরি হেডম্যান পাড়া উৎসব আয়োজক কমিটির নেতা উক্যছিং মার্মা ও মংমং মার্মা বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও উৎসব মুখর পরিবেশে বৈসাবি উৎসব পালিত হবে। বৈসাবিকে সামনে রেখে ৪ দিনের বর্ণাঢ্য কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ব্যালী, ক্যায়াং দর্শন, সমবেত প্রার্থনা, অন্ন দান ও ধর্মীয় দেশনা, পিঠা তৈরি, ঐতিহ্যবাহী তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উঠা, পানি খেলা, সাংস্কৃতিক ও পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

অপদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি ও বিজিবির জোন জে সি ও সামিউল ইসলাম জানান, পহেলা বৈশাখকে বরণ করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও সদরে অবস্থিত সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশ ১১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)। বৈশাখ উদযাপনে বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসন পৃথক ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বৈসাবি উৎসব শান্তি পূর্ণভাবে পালনের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বৌদ্ধ ক্যায়াংগুলোতে আনসার ভিডিপি ও পুলিশ মোতায়েনসহ বিশেষ নজর রাখা হবে।