শাহেদ মিজান, সিবিএন:

উপজেলা নির্বাচনে কক্সবাজার সদর উপজেলা নিয়ে মনোনয়নপত্র জমার দিন সৃষ্টি হওয়া নাটকীয়তা আরো বৃহৎ আকার নিয়েছে। এরপর পিছিয়ে গেলো নির্বাচনের তারিখ। ২৪ মার্চের পরিবর্তে ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন পেছানোর কারণে নতুন করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের সুযোগ দেয়া হয়। এতে শুরু নাটকীয়তা চূড়ান্ত স্তর। নতুন করে মনোনয়পত্র জমা দানের সুযোগ পাওয়ায় নতুন করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের হিড়িক পরে পড়ে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত নতুন করে আরো আটজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। আরো সংগ্রহ করার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে ভাইস-চেয়ারম্যান পদেও নতুন করে তিনজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এই নিয়ে জেলাজুড়ে বেশ আলোচনায় এসেছে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন।

কক্সবাজার নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য মতে, তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে কক্সবাজারের সাত উপজেলার নির্বাচনের ধার্য্য হয়। এর মধ্যে ছিলো কক্সবাজার সদর উপজেলাও। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ছিলো মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন। ওই দিন আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েল ও সেলিম আকবর নামে আরেকজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে সেলিম আকবরকে বাধা দেয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। এই নিয়ে কিছুটা মাতামাতিও হয়েছিল। তবে দিনের শেষে সেলিম আকবর কায়সারুল হক জুয়েলের সাথে বুঝাপড়া করেন বলে খবর বের হয়। এতে জুয়েল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় হওয়ার পথে ছিলো। কিন্তু হুট করেই পরদিন (২৭ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন। এতে সর্বত্র ব্যাপক কৌতুহল সৃষ্টি হয়।

জনশ্রুতি রয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা দিতে সেলিম আকবরকে বাধা এবং তাকে ‘সমাঝোতা’ করতে বাধ্য করার অভিযোগ পেয়ে নির্বাচন কমিশন তারিখ পিছিয়ে নতুন করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সুযোগ করে দেয়। তবে এই ঘটনার সাথে কক্সবাজারের সরকারপন্থী জনপ্রতিনিধিসহ কিছু আওয়ামী লীগের নেতাদের ইন্ধন ও তদবির রয়েছে অভিযোগ করে আসছেন কায়সারুল হক জুয়েল।

এদিকে তারিখ পেছানোর পর ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে গতকাল ২ মার্চ পর্যন্ত নতুন করে আটজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেয়েছেন। এদের মধ্যে সবাই আলোচিত ও নামকরা প্রার্থী। তারা হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চারবারের চেয়ারম্যান ও গত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী নূরুল আবছার, গতবারের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব, সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল করিম মাদু, কক্সবাজার জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়, জাপা নেতা অধ্যাপক আতিকুর রহমান , জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরুল রাশেদ, জেলা পরিষদ সদস্য সোহেল জাহান চৌধুরী। এসব প্রার্থীরা সবাই রাজনৈতিক ও জনপ্রিয়তায় কম নয়! অন্যদিকে ভাইস-চেয়ারম্যান পদে নতুন করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন হাসান মুরাদ আনাচ, কামাল উদ্দীন ও বাবুল কান্তি দে । এছাড়া আগেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সাত প্রার্থী। তারা হলেন- আমজাদ হোসেন ছোটন রাজা, মোরশেদ হোসাইন তানিম, রশিদ মিয়া, আবদুর রহমান, কাজী রাসেল আহম্মদ নোবেল, কাইউয়ুম উদ্দীন। মোট নয়জন ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

এছাড়া মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র প্রথম দিকে তিনজনই রয়েছেন। তারা হলেন- বর্তমান ভাই-চেয়াম্যান হেলেনাজ তাহেরা, জেলা যুবমহিলা লীগের সভানেত্রী আয়েশা সিরাজ ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী হামিদা তাহের।

সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বলেন, নতুন করে আটজনসহ মোট ১০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আরো মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার সম্ভাবনা রয়েছে। জমা নেয়া হবে ৪ মার্চ বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, পূন: তফশীল অনুযায়ী আগামী ৪ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল, ৬ মার্চ বাছাই ও ৩১ মার্চ কক্সবাজার সদর উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।