নিউজ ডেস্ক:
পরকীয়ার জের ধরে স্ত্রীর সাথে ঝগড়ার পর ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোর্শেদ আকাশ। এই ঘটনার দিন পার হতে না হতে স্ত্রীর জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে ঘর ছেড়ে হোটেলে আত্মগোপনে থাকার ঘটনা ঘটান চট্টগ্রামের আরেক ব্যবসায়ী।

তবে স্ত্রীর জ্বালায় হোটেলেও আত্মগোপনে থাকা হলো না হাজী মো. জসিম উদ্দিন নামে ওই ব্যবসায়ীর। স্ত্রীর দায়ের করা অপহরণ মামলায় পুলিশের খোঁজাখুঁজিতে হোটেল থেকে নিজেই বেরিয়ে আসেন তিনি।

একপর্যায়ের আর কোনোদিন এই ধরনের কর্মকান্ড করবেন না বলে তার কাছ থেকে মুচলেকাও নেন পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটে এই ঘটনার যবনিকাপাত। আর ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জসিমের স্ত্রী কোহিনূর আক্তার নগরীর কোতোয়ালী থানায় গিয়ে অপহরণ মামলা দায়েরের পর শুরু হয় ঘটনার চিত্রনাট্য। তখনো স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার বিষয়টি পুলিশকে জানায়নি স্ত্রী কোহিনুর।

কোহিনুর মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের কাঁচাবাজারে তার স্বামী জসিম উদ্দিনের একটি আড়ৎ আছে। বুধবার বিকেল ৪টার দিকে জসিম উদ্দিন আড়ৎ থেকে নগরীর চান্দগাঁও থানার তৈয়বিয়া সাত্তার হাউজিং সোসাইটিতে বাসায় যান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। তার ধারণা, ব্যবসায়ী স্বামী জসিম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়েছে। তবে কারা অপহরণ করেছে এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে দায়ী করেননি তিনি।

এজাহার মুলে মামলা দায়েরের পর পুলিশ ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনের খোঁজে তাৎক্ষনিকভাবে মাঠে নেমে পড়েন। শহরের অলি-গলিতে খোঁজাখুঁিজর খবর পৌঁছে যায় হোটেলে আত্মগোপনে থাকা জসিম উদ্দিনের কাছেও। ফলে নিরুপায় হয়ে তিনি বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে আড়তে ফিরে আসেন। সেখানে গিয়েও দেখেন একদল পুলিশ বসা। একপর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাসা থেকে বেরিয়ে হোটেলে আত্মœগোপনের কথা স্বীকার করেন জসিম উদ্দিন।

নগর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন এ প্রসঙ্গে বলেন, বুধবার বিকেল ৪টার দিকে জসিম উদ্দিন আড়ত থেকে বাসায় যান। বাসায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। কিন্তু ঝগড়ার বিষয়টি জানাননি স্ত্রী কোহিনুর। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে যান। রাতে কোতোয়ালী এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে আত্মগোপন করেন। পুলিশ খোঁজাখুঁিজর পর বৃহ¯পতিবার রাতে তিনি আড়তে গিয়ে দেখেন, সেখানে পুলিশ অবস্থান করছে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি আর কোনোদিন এই ধরনের কর্মকান্ড করে পরিবারের সদস্যদের দুশ্চিন্তায় ফেলবেন না মর্মে পুলিশকে মুচলেকা দেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ভাই স্ত্রীর জ্বালায় ঘর ছেড়ে হোটেলে গেলাম সেখানেও থাকতে পারলাম না। পুলিশ যেখানে আমার স্ত্রীকে শাসানো দরকার সেখানে উল্টো আমাকে শাসিয়ে গেলো। মুচলেকা নিল, যেন এ রকম আমি আর না করি। এখন দেখছি কবরই নিরাপদ।

স্ত্রীর জ্বালাটা কি রকম জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন বলেন, ভাই ঘরের কথা বাইরে বলা ভাল না। পারিবারিক অশান্তি আর কি? এগুলো কি বলা যায়। বললে এগুলো নিয়ে বাইরের লোকে আরও হাসহাসি করবে। তাই থাক..।